বাড়ছে নদ-নদীর পানি : বন্যা আতঙ্কে সিলেটবাসী
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:০৯

বাড়ছে নদ-নদীর পানি : বন্যা আতঙ্কে সিলেটবাসী

খলিলুর রহমান

প্রকাশিত: ০৬/০৫/২০২৪ ০৪:১৩:৩৭

বাড়ছে নদ-নদীর পানি :  বন্যা আতঙ্কে সিলেটবাসী


গতকাল রোববার থেকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জনপদ সিলেট ও সীূমান্ত ভারতীয় দুটি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টিবলয়ের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ওই দিন থেকেই  সিলেটে বজ্রপাত, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠেছে। রোববার রাত থেকেই  সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। পাশপাশি ভারতের মেঘালয়া ও আসাম রাজ্যে বিভিন্ন পর্বতমালা থেকে নেমে আসা  ঢলে সিলেটে নদ-নদীর পানি বেড়েেই চলছে।

নদ-নদীর পানি এখন পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। তবে এবছর বড়ধরণের বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যার ফলে ভয়াবহ বন্যার আতঙ্কে রয়েছেন সিলেটের মানুষজন।

ভারতের মেঘালয়া রাজ্যের চেরাপুঞ্জিসহ বাংলাদেশ সীমান্ত বেষ্ঠিত পর্বতমালায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। সূত্র মতে ভারতের আসাম রাজ্যের লামডিং- লানটিং ও লুসাই পর্বতমালায় ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে করে সিলেটের ওপর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা কুশিয়ারা, লোভা,সাুির,ধলাই, গোয়াইন প্রভৃতি নদীতে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া স্থনীয়ভাবে ভারী বর্ষণ ও অব্যাহত থাকায় সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্য মতে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত  সিলেটে ১২৫ মি. মি. বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্তই বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মি. মি.। আগমী ৪৮ ঘন্টায় আরো ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে শুষ্ক মৌসুমের বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ মিটার। বর্ষা মৌসুমে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। সোমবার নদীর ওই পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ৫৩ মিটারে অবস্থান করছিল। সারি নদের জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্ট শুষ্ক মৌসুমে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৭০ মিটার। বর্ষা মৌসুমে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৩৫ মিটার। আজ নদের ওই পয়েন্ট পানি ৮ দশমিক ১৬ মিটারে অবস্থান করছিল। এ ছাড়া সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনও বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।

এ অবস্থায় সিলেটের হাওরের বোরো ধান দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এর আগে ২০২২ ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন সিলেট বিভাগের মানুষ। সেই সময় বন্যায় সিলেট বিভাগের ৭২ শতাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়। বিভাগজুড়ে ৮২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। কেবল সিলেটেই মারা যায় ৫১ জন। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বিপুল সংখ্যক বাড়িঘর ও গবাদিপশুর।

সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ গণমাধ্যমকে জানান, প্রতি ২ থেকে ৩ বছর পর পর সিলেটে বড় বন্যার আশঙ্কা করা হয়। তাই এ বছর বর্ষায় বড় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন-  সিলেটে বৃষ্টির কারণে আগাম বন্যা হয় না। মূলত বাংলাদেশের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্টি হলে আগাম বন্যা হয়ে থাকে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। উজানে ভারতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আগাম বন্যা দেখা দিতে পারে বরে জানান তিনি।

আজকের সিলেট/স্টাফ/কে.আর

সিলেটজুড়ে


মহানগর