জেলা প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভপুর উপজেলার ধোপাজান চলতি নদীতে অবৈধভাবে ডেজ্রার মেশিনের মাধ্যমে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন। ড্রেজার দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলনের কারণে ধোপাজান চলতি নদীর দুই পাড়ের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন অচিরেই নদীর দুই পাড়ে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এতে সদর উপজেলার ডলুরা গণকবর, বিজিবি ক্যাম্প ফসলি জমি, ঘরবাড়ি এবং মসজিদ হুমকির মুখে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিগত চার মাস ধরে ডেজ্রার মেশিন বন্ধ থাকলেও এখন আবার সেই ড্রেজার মেশিন দিয়েই দিনে রাতে চলছে বালু উত্তোলন। স্থানীয় কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ও ইজারাদারদের যোগসাজশেই চলছে এই ড্রেজার মেশিন। আর এতে করে এই এলাকার পরিবেশ প্রকৃতি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার অবস্থায় রয়েছে এমন অজুহাতে নদীতে বালু-পাথর উত্তোলন শুরু করা হলেও এখন শ্রমিকদের কথা চিন্তা না করে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন শিগগিরই পদক্ষেপ না নিলে তা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে সাধারণ মানুষ।
এর আগে ড্রেজার মেশিন চালানোর প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বারকি শ্রমিক সংগঠনগুলো। কিন্তু কয়েক মাস ড্রেজারের ব্যবহার বন্ধ থাকার পর আবার সেটি শুরু হওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা বলেন, আমরা গরিব মানুষ নদীতে বালু-পাথর উত্তোলন করে জীবনযাপন করি। কিন্তু ড্রেজারের কারণে কোনো কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। ড্রেজার মেশিন দিয়ে দুই পাড়ের বালু- পাথর প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের কাছে শ্রমিকদের একটাই দাবি তাদের পরিবার ও পরিবেশ বাঁচাতে যেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ড্রেজার মেশিন ধ্বংস করা হয়।
জানা যায়, উচ্চ আদালতে তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মুনাফালোভী ইজারাদার চক্র ইজারা গ্রহণের মাধ্যমে অথবা মেয়াদ বৃদ্ধির মাধ্যমে মহালগুলোতে পরিচালনা করছে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে মহালের চারপাশে কোনো জনপদ থাকবে কি না সন্দেহ আছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত ফাতিমা বলেন, ড্রেজার মেশিন বন্ধের ব্যাপারে বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কোনো অর্ডার আমি পাইনি। পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন, আমাদের কাছে এ রকম কোনো তথ্য নেই। তবে যদি ড্রেজার মেশিন চালানো হয়ে থাকে তাহলে আবার অভিযান চালানো হবে। ড্রেজার মেশিন চলতে দেওয়া হবে না।
সুনামগঞ্জে জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ বলেন, আমি আজকে বিশ্বম্ভপুরে গিয়েছিলাম সেখানে গিয়ে ইউএনও ও ওসি সাহেবকে বলেছি কোনো প্রকার ড্রেজার মেশিন চলতে দেওয়া যাবে না। ড্রেজার চালানোর খবর পেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।