নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট নগরের চৌহাট্টা মোড় এলাকায় পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়ার ঘটনায় গাড়ির মালিক ওই সার্জেন্টকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সার্জেন্ট চয়নের মোটরসাইকেলে ওই বস্তুটি পাওয়ার ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করে সেনাবাহিনী জানায় এটি আসলে বোমা নয়, একটি টাইলস কাটার যন্ত্র (গ্রাইন্ডিং মেশিন)।
গত বুধবার মোটরসাইকেলে শনাক্ত হওয়ার পর ওই এলাকা প্রায় ২২ ঘণ্টা ঘিরে রাখে র্যাব-পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করে জানানো হয়, আলোচিত বস্তুটি কোনো বিস্ফোরক নয়। টাইলস কাটার একটি যন্ত্র (গ্রাইন্ডিং মেশিন)।
এরপরই প্রশ্ন ওঠে পুলিশের একজন সার্জেন্টের মোটসাইকেলে ওই বস্তুটি রাখলো কে? এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই শনিবার চয়ন নাইডুকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিলেট মহানগর পুলিশ।
শনিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ বলেন, ঘটনার সময় চয়ন নাইডু নিজের দায়িত্বরত এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এছাড়া তার মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু রাখা হলেও তিনি কেনে টের পেলেন না এজন্য তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মোটরসাইকেলে ‘গ্রাইন্ডিং মেশিন’ রাখার ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় কোনো দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে শাস্তি দেয়া হবে।
গত বুধবার (৫ আগস্ট) রাতে সিলেট নগরের ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চয়ন নাইডুর মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু পাওয়া যায়। এরপর বোমা সন্দেহে রাতভর ওই এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও ধ্বংসকরণ দুটি দল বোমাসদৃশ বস্তুটি অপসারণ করে।
অভিযান শেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ লে. কর্নেল রাহাত বলেন, ভুলবশত কিংবা কেউ আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে যন্ত্রটি রেখে যেতে পারেন।
পুলিশ জানায়, সিলেট নগর ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট চয়ন নাইডু বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চৌহাট্টা মোড়ে মোটরসাইকেল রেখে একটি চশমার দোকানে যান। ফিরে এসে তিনি মোটরসাইকেলে বোমাসদৃশ বস্তু দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পরে এলাকাটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বুধবার রাতে ওই এলাকায় কিছু দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই এলাকার রাস্তা ও দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় আম্বরখানা-চৌহাট্টা, মিরবক্সটুলা-রিকাবীবাজার সড়ক। বুধবার রাতে র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে গেলেও অভিযান চালায়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে আসে। আড়াইটার দিকে দলটি মোটরসাইকেল থেকে ‘বোমাসদৃশ বস্তুটি’ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অভিযান শেষে বিকেল চারটার দিকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়।