২৬ জুলাই ২০২২


হবিগঞ্জে ৪ ফিলিং সিএনজি স্টেশনে গ্যাস নেই, অটোরিকশার ভাড়া দ্বিগুণ

শেয়ার করুন

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের আটটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে চারটিতেই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই মাসিক বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় সোমবার বিকেল থেকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও হালকা যানবাহন চলতে সমস্যা হচ্ছে। খোলা থাকা বাকি ৪ স্টেশনে দিনব্যাপী দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও গ্যাস পাচ্ছে না গাড়িগুলো। ফলে বিভিন্ন সড়কে যেমন কমেছে গাড়ি, তেমনি বেড়েছে অটোরিকশার ভাড়াও।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, সিলেট বিভাগে জালালাবাদ গ্যাসের অধীনে আগে প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন গ্যাস বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এখন দেওয়া হচ্ছে ২৬১ মিলিয়ন। তা দিয়েই চলতে হচ্ছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জে সবচেয়ে বেশি গ্যাস প্রয়োজন হয়। কারণ গ্যাস পাম্পের পাশাপাশি এখানে রয়েছে শিল্পাঞ্চল। এ জেলায় হবিগঞ্জ আঞ্চলিক অফিসের অধীন গত জুন মাসে ২১ লাখ ২৫ হাজার ৪৫৪ ঘনমিটার গ্যাস বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ শেষ হওয়ায় হবিগঞ্জের ৮টি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে চারটি বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হচ্ছে শায়েস্তাগঞ্জ ফিলিং স্টেশন, জিএস ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন, মাধবপুরের আল আমিন ফিলিং স্টেশন ও সুশান ফিলিং স্টেশন। চালু আছে মাধবপুরের সেমকো ফিলিং স্টেশন, নবীগঞ্জের আউশকান্দি সিএনজি অ্যান্ড রিফুয়েলিং স্টেশন, সদরে মেসার্স এম হাই অ্যান্ড কোং সিএনজি লিমিটেড ও বাহুবলে মেসার্স সিটকো সিএনজি লিমিটেড। যেসব স্টেশন চালু আছে তাতে কয়েকশ গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

অপরদিকে, বিভিন্ন সড়কে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে হবিগঞ্জ থেকে মিরপুর আগে ছিল ৩০ টাকা বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে ৬০ টাকা, মিরপুর থেকে বাহুবল ১৫ টাকার জায়গায় ৩০ টাকা, নবীগঞ্জে ৪০ টাকার জায়গায় ৬০ টাকা, বানিয়াচংয়ে ৪০ টাকার জায়গায় ৬০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

সিএনজিচালিক অটোরিকশাচালক রুবেল মিয়া বলেন, সোমবার চারটি গ্যাস পাম্প বন্ধ থাকায় যেগুলো চালু আছে সেগুলোতে দীর্ঘ লাইন। দিনব্যাপী লাইনে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাত ১০টার পর গ্যাস দেওয়ার কথা জানায় তারা। তাও ১০০ টাকার গ্যাস দেবে। তাই আধা লিটার পেট্রল নিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে এসেছি। আজ আর গাড়ি বের করিনি।’

অটোরিকশাচালক মো. লিটন মিয়া বলেন, ‘আজ সকাল ৯টায় এসে বেলা ৩টা বাজলেও স্টেশন থেকে গ্যাস নিতে পারিনি। দীর্ঘ লাইন। কখন পাবো তাও জানি না। শুনেছি আবার মাত্র ১০০ টাকার গ্যাস দেবে। তা দিয়ে কত সময় চলতে পারবো।’

আরেক অটোরিকশাচালক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘হবিগঞ্জ-অলিপুর রোডে আগে ভাড়া ছিল জনপ্রতি ৪০ টাকা। এখন ভাড়া নেওয়া হয় ৬০ টাকা। কিন্তু লাভ কি? গ্যাস না পাওয়ায় গাড়ি চালাতে পারছি না। অথচ মালিককেতো ভাড়া দিতে হবে। গাড়ি বের করলেই ভাড়া দিতে হয়। এখন আমরা চলি কী করে।’

শায়েস্তাগঞ্জ সিএনজি কোম্পানি লিমিটেডে স্বত্তাধিকারী শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি সিএনজি স্টেশনের জন্য একটি মাসিক বরাদ্দ থাকে। নির্ধারিত সময়ের আগেই সে বরাদ্দ শেষ হওয়ায় স্টেশন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ মাসের বাকি ক-দিন বন্ধ রাখতে বলা হয়।’

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লি. হবিগঞ্জ আঞ্চলিক বিতরণ কার্যলয়ের প্রধান মো. খালেদ গনি বলেন, ‘প্রতিটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনেরই মাসিক বরাদ্দ নির্ধারিত আছে। যখন তারা ফিলিং স্টেশন করার অনুমোদন নেন তখনই তা নির্ধারণ করা হয়। বন্ধ ফিলিং স্টেশনগুলোর মাসিক বরাদ্দ তারা এরই মধ্যে শেষ করে ফেলেছে। তাই সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। ১ আগস্ট থেকে তারা পুনরায় চালু করতে পারবে।’

শেয়ার করুন