১৭ অক্টোবর ২০২২
শাবি প্রতিনিধি : সঠিক সময়ে পরিমিত ও পুষ্টিকর খাবারের অভাবে মানুষের শরীরের নানা ধরনের রোগব্যাধি বাসা বাঁধে। বিশেষকরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা হলে থাকে তাদের খাবার নিয়ে নানা সমস্যার কথা শোনা যায়। খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ। হলের খাবার কি রকম হওয়া উচিত ও খাবার সমস্যা দূরীকরণে শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরা হলো।
‘প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দরকার’
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংয়ের নাম শুনলে শিক্ষার্থীদের গা শিউরে ওঠে। শিক্ষার্থীরা ডাইনিংয়ের খাবারের প্রতি অনীহা প্রকাশ করে। ভালো মােেনর খাবার না পাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতাসহ নানা জটিলতায় ভোগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ডাইনিংয়ের খাবারের মান এতটা নি¤œ পর্যায়ে নেমেছে যে, খাবারের সময় হলে শিক্ষার্থীরা এটা ভেবে ভয় পায় যে এখন ডাইনিং এ গিয়ে খেতে হবে। হ্যাঁ, এটা মানছি যে, মাঝে খাবারের মান উন্নত করার লক্ষ্যে নামমাত্র মিটিং আলোচনা সভার ব্যবস্থা করা হয়। তবে তেমন ফলপ্রসু হয় না। একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার সাথে পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা ওতপ্রোততভাবে জড়িত। এরমধ্যে খাবারের সু-ব্যবস্থাপনা অন্যতম। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের শিক্ষার্থীরা পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পড়াশোনা করার লক্ষ্যে খাবারের মান বাড়াতে প্রয়োজন হল প্রশাসনের কঠোর নজরদারি।
মোহাইমিনুল ইসলাম
২য় বর্ষ, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগ‘শিক্ষার্থীদের পুষ্টিহীনতা কাম্য নয়’
হলের খাবারের মান দিনে দিনে এমন অবস্থায় নামছে যে হলের খাবার খেয়ে কোনোমতে খেয়ে বেঁচে থাকা যাবে কিন্তু সুস্থ থাকা দায়। একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য দৈনিক যে পরিমাণ খাবার দরকার, সেটা হলে গিয়ে খাবারের পরিমাণ দেখলেই বোঝা যাবে। হলের খাবারে পরিমাণ কম ও খাবারের মান নি¤œমানের হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী পুষ্টিহীনতায় ভোগে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রান্নাবান্না হওয়ায় বিভিন্ন অসুখ বিসুখেও শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়। রান্নার উপকরনগুলোও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সংরক্ষন করা হয়। এছাড়া খাবার পরিবেশনের বাসন গুলোও অনেক সময় অপরিষ্কার থাকে। মানসম্মত খাবারের অভাবে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে গেলে এসবের দায়ভার কে নিবে? পড়াশোনা শিখে উচ্চশিক্ষিত হতে এসে এভাবে পুষ্টিহীনতা সহ আরো নানা রকম রোগে ভোগে কারো ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে এটা কারোরই কাম্য নয়। সঠিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রশাসনের তদারকির মধ্য দিয়ে খাবার ব্যবস্থাপনাসহ আনুষঙ্গিক সমস্যা সমাধান হলে শিক্ষার্থীরা পুষ্টিহীনতা থেকে মুক্তি পাবে।
মাহামুদা আফরোজ
২য় বর্ষ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ
‘প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার মিলে’
একজন শিক্ষার্থীর দৈনিক ২৮০০ থেকে ৩০০০ কিলোক্যালোরি খাবার দরকার, সেই তুলনায় যথেষ্ট পুষ্টির অভাব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হলের খাবারে। শিক্ষার্থী যদি ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করতে পারেন, তাহলে তার সুস্থ থাকা এবং পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ দেওয়া সম্ভব হয় না। হলে একজন শিক্ষার্থীর দৈনিক যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন তার তুলনায় তাকে পরিমাণে অনেক কম খাবার দেওয়া আমাদের সুস্থ থাকাটা প্রথম বিবেচনায় রেখে অন্যান্য সযোগ-সুবিধা গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। নিয়মিত হলের ডাইনিং নজরদারি, প্রয়োজনে ডাইনিং এর দায়িত্বে থাকা লোকদের অপসারণ করে ভালো লোক নিয়োগ দেওয়া। যাতে শিক্ষার্থীরা পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার খেয়ে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে পারে। এই হোক আমাদের বিশ্ব খাদ্য দিবসের চাওয়া।
মমিনুল ইসলাম
২য় বর্ষ, জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ