২১ মে ২০২৩
এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া : আজ ২১ মে আন্তর্জাতিক চা দিবস। বিশ্বের এই দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত পানীয়ের পুষ্টিগত গুরুত্বের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে জাতিসংঘের উদ্যোগে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ দিবসটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চা-শিল্পে জাতির পিতার অবদান এবং চা বোর্ডে যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে ২০২০ সালের ২০ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় চা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
জানা যায়, হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালীর ২৫ চা বাগানে ২০২২ সালে চায়ের উৎপাদন ২৪ শতাংশ ঘাটতি থাকলেও চলতি মওসুমের দুমাসেই চায়ের উৎপাদন বেড়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার কেজি। যা গত বছরে একই সময়ের তুলনায় ৪৬.৪৪ শতাংশ বেশি। কিন্তু বাড়েনি চায়ের দাম। চলতি বছর নিলামে চায়ের প্রতিকেজি গড়ে দাম উঠেছে ২০০ টাকা। অথচ এক কেজি চা উৎপাদনে খরচ হয় আড়াইশ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা। এ অবস্থায় উৎপাদন বাড়লেও দাম না বাড়ায় লোকসানের দিকে যাচ্ছে চা বাগানগুলো। হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালীর ছোটবড় ২৫টি চা বাগানে ২০২৩ সালের প্রথম দুমাসে উৎপাদিত হয়েছে ৮ লাখ ৮২ হাজার ৮শ ২০ কেজি চা পাতা। যা ২০২২ সালের চেয়ে ৬ লাখ ৮০ হাজার কেজি বা ৪৬.৪৪ শতাংশ বেশি। তবে ২০১৬ সালে ভ্যালীতে রেকর্ড ১ কোটি ৩২লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল।
ভ্যালীতে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও বাড়েনি চায়ের মুল্য। ২০২২ সালে নিলাম বাজারে প্রতিকেজি চায়ের গড় মুল্য ২শ টাকা হলেও ২০২৩ সালে মওসুমের প্রথম দুমাসের নিলাম মুল্য একই হার রয়েছে। বাগান কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছর প্রথম দিকে কিছুটা বৃষ্টি হওয়ার কারণে চায়ের উৎপাদন বাড়ে। কোন কোন বাগানে এবার উৎপাদন দ্বিগুনের চেয়ে বেশি বেড়েছে। চান্দপুর চা বাগানে দুমাসে উৎপাদন বেড়েছে ৩১৮.২৯ শতাশং বেশি।
একই ভাবে লস্করপুর চা বাগানে ১৬২.৫৮ শতাংশ এবং মধুপুর চা বাগানে ১৭৮.১৯ শতাংশ বেশি। তবে কোন বাগানেই দুমাসে কোন ঘাটতি নেই। এ অবস্থায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ বৃষ্টি এবং রোগ বালাই কম থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা করছেন। কিন্তু চায়ের মুল্য না বাড়ায় বাগানগুলো লোকসানের দিকে যাচ্ছে।
একই ভাবে লস্করপুর চা বাগানে ১৬২.৫৮ শতাংশ এবং মধুপুর চা বাগানে ১৭৮.১৯ শতাংশ বেশি। তবে কোন বাগানেই দুমাসে কোন ঘাটতি নেই। এ অবস্থায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ বৃষ্টি এবং রোগ বালাই কম থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা করছেন। কিন্তু চায়ের মুল্য না বাড়ায় বাগানগুলো লোকসানের দিকে যাচ্ছে। চা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চা বাগানের শ্রমিকদের মজুরী ১৭০ টাকা হলেও তাদের রেশন, বাসস্থান, চিকিৎসাসহ সকল সুবিধা দিতে হচ্ছে। এছাড়া বর্তমান বাজারে সার, কীটনাশকসহ সকল পন্যেও দাম বেড়েছে। বেড়েছে মেশিনারী সকল যন্ত্রের। কিন্তু গত ১০ বছরে ১০শতাংশও বাড়েনি চায়ের মুল্য। এ অবস্থায় উৎপাদন বাড়লেও লোকসান হচ্ছে বাগানগুলোর।
লস্করপুর ভ্যালীর চেয়ারম্যান ও চন্ডিছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ হোসেন জানান, নানা রোগ বালাই আর খরার পরও ভ্যালীতে সকলের আন্তরিকতার কারণে উৎপাদন দুমাসেই বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। কিন্তু চায়ের মুল্য বাড়েনি। তাই উৎপাদন বাড়লেও লোকসানে পড়বে চাবাগানগুলো। এছাড়া বর্তমানে খরার কারণে পাতা উঠছে কম।
বৈকুন্ঠপুর চা বাগান ব্যবস্হাপক মোঃ শামসুল হক ভূইয়া জানান, চা শিল্প দিন দিন লোকসানের দিকে যাচ্ছে। কারণ প্রতিদিন চায়ের উৎপাদন খরচ বাড়ছে, কিন্তু চায়ের বাজার মুল্য বাড়ছে না। উৎপাদনের সাথে বিক্রয়মুল্য সামঞ্জ্য না থাকলে ক্ষতির মধ্যে পড়বে চা শিল্প। প্রতিকেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকার উপরে নিলামে বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা থেকে ২৩৫ টাকা
তিনি জানান, এ অবস্থায় চায়ের মূল্য বাড়ানোর কোন বিকল্প নাই।