১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩


জৈন্তাপুরে ২ মাসে ৯০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : গত দুই মাসে দেশের সীমান্ত এলাকা জৈন্তাপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ভারতীয় চোরাই ৬৪৯ বস্তা চিনি, গরু-মহিষসহ অবৈধ বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ।

সিলেট জেলার জৈন্তাপুর মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম (পিপিএম) বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জৈন্তাপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান ব্যবসা বন্ধে পুলিশের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের আরও শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। পুলিশসহ আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি আসা বন্ধ এবং এই ব্যবসার সাথে জড়িত চোরাকারবারিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চোরাচালান বিরোধী পুলিশের অভিযান চলমান থাকায় সীমান্তে চোরাকারবার ব্যবসা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে তিনি দাবি করেন।

সীমান্ত চোরাচালান ব্যবসা বন্ধ ও প্রতিরোধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সচেতন মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন। চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করতে উপজেলার সচেতন নাগরিক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে জব্দ চোরাচালান পণ্যের মধ্যে রয়েছে ইয়াবা ৭৩ পিস, গরু ২৬টি, মহিষ ১২টি, চা পাতা ৪০ বস্তা, মদ ১২ বোতল, ভারতীয় নিষিদ্ধ সিরাপ ১৬ বোতল, ভারতীয় শাড়ি ১৩০ পিস, লেহেঙ্গা ৫০ পিস এবং ভারতীয় নাছির বিড়ি ১৩ লাখ ৪৪ হাজার শলাকা, ভারতীয় চোরাই চিনি ৬৪৯ বস্তা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে নৌকা ট্রাক গাড়িসহ অনেক যানবাহন আটক বা জব্দ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ নিয়মিত ২৪টি মামলা দায়ের করা হয় এবং ১৮ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সীমান্তে চোরাচালান ও মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

গত দুই মাসে চোরাচালান বিরোধী অভিযানে অন্তত ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় এসব পণ্য জব্দ করা হয়েছে বলে জৈন্তাপুর মডেল থানার সাব-ইন্সপ্রেক্টর শাহীদ মিয়া জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, পুলিশের অভিযানে রাস্তা-ঘাটে বেপরোয়া গতিতে ভারতীয় চোরাই পণ্য পরিবহন কাজে ডিআই ট্রাক পিকআপ-সিএনজির কিছুটা গতিরোধ চেষ্টার ফলে হাট বাজারগুলোতে ভারতীয় চিনির মজুদ এবং সরবরাহ অনেকটা কম রয়েছে বলে স্থানীয় জনসাধারণ মনে করছেন। চলিত বছরে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দেশের বাজারে চিনির মূল্য বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে ভারতীয় চিনি সহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের চাহিদা থাকায় অবৈধ পথে জৈন্তাপুর সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করে আসছে। জেলা ও উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সীমান্তে চোরাচালান ব্যবসা বন্ধে বিজিবি পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ, বিজিবি সহ সরকারের বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ব্যবসা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে পুলিশের এসব অভিযানের পর এখনও জৈন্তাপুর সীমান্তের চারিকাটা থেকে নলজুড়ী পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে ভারতীয় গরু-মহিষ, চিনিসহ নানা পণ্য অবৈধ পথে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে।

সীমান্ত জনপদের বাসিন্দারা জানান, অতীতের চেয়ে বিগত কয়েক মাস থেকে চোরাচালান ব্যবসা বন্ধ করতে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে তাদের চোরাচালান বিরোধী অভিযানের তৎপরতা অনেকটা বৃদ্ধি করেছেন।

শেয়ার করুন