২৭ অক্টোবর ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক: বালুখোকুদের তান্ডবে বিলীন হতে চলেছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের উত্তর রাজনগর গ্রাম। নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চায়েতী কবরস্থান, জনচলাচলের সরকারি সড়ক ও বসতবাড়ি। গত প্রায় একমাস ধরে এ তান্ডব চালালেও অজ্ঞাত কারণে দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন।
কোম্পানীগঞ্জে ২ নং ইসলামপূর পূর্ব ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। গ্রামে হাজারো ঘরবাড়ি মসজিদ স্কুল মাদ্রাসা। রয়েছে পঞ্চায়েতি কবরস্থান ও জনচলাচলের সদর রাস্তা।
প্রায় ১ মাস ধরে একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মক্রম মিয়ার ছেলে ইলিয়াছ ও তার চাচাত ভাই বতুল্লাহর পুত্র বদরুলের নেতৃত্বে একটি বালু ও মাটি খেকোচক্র রাতের আঁধারে রাস্তা, কবরস্থান ও বাড়ঘরের ধার খোদাই করে বালু উত্তোলন করছে। ইতোমধ্যে গ্রামের রাস্তা কবরস্থান ও বাড়িঘরে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী জানান, ধলাই নদীর ধারেই উত্তর রাজনগর গ্রামটির অবস্থান। গ্রামকে রক্ষা করার জন্য সরকার অর্ধকোটি টাকা দিয়ে তৈরি করেছিল কালা পাথরের বাঁধ। বালুখেকোদের তান্ডবে কালা পাথরের বাধটি একবছর আগেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এখন বালুখোকোদের লুলুপ দৃষ্টি গ্রাম রাস্তা ও কবরস্থানের উপর।
প্রশাসনের কোনো অনুমতি না থাকলেও প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে দৈনিক লাখো ঘনফুট বালু তুলে বিক্রি করছে তারা। গ্রামের লোকজন প্রতিবাদ করলে উল্টো লোকজনকে মামলা হামলার ভয় দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উত্তর রাজনগরের বিশিষ্ট মুরব্বি জৈন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন- আমাদের রাজনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মক্রমের পুত্র ইলিয়াস আলীসহ চার পাঁচজন মিলে আমাদের গ্রামের রাস্তার ধারে ধলাই নদী থেকে প্রতিরাতে চুরি করে বালু তোলে বিক্রি করছে। ফলে জনচলাচলের রাস্তা ধসে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। আমরা তাদের বাধা দিলেও বাধা না মেনে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে। তিনি অবৈধ ও ধংসাত্মক বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে কোম্পানীগন্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন- ধলাই নদীর উত্তর রাজনগর এলাকা লীজ দেওয়া হয়নি। এখান থেক কেউ বালু তুললে তার বিরুদ্ধে অবশ্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোম্পানীগন্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বলেন- রাজনগর এলাকায় অবৈধ বালু উত্তালনের কোনো ইনফরমেশন আমাদের কাছে নেই। এ রকম কেউ বালু উত্তোলন করে থাকলে তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইলিয়াস আলীর মুঠোফোনে কল করা হলে এক মহিলা জানান- তিনি রাতভর বালু উত্তোলনের কাজে ছিলেন। তাই তিনি এখন ঘুমে রয়েছেন।