১৫ জুন ২০২০


তিন জোনে ভাগ হচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা

শেয়ার করুন

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ জবুথবু পুরো বিশ্ব। অসহায় তাবৎ দুনিয়ার ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো। অসহায় উন্নয়নশীল বাংলাদেশও। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৫শ ২০ জন। হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে লাশের সারি। এমন অবস্থায় দেশকে করোনার কবল থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন পদ্ধতিতে এগুচ্ছে সরকার। দেশকে ভাগ করেছে লাল, হলুদ আর সবুজ জোনে। উপজেলা ভিত্তিক জনসংখ্যা ও আক্রান্তের হার বিবেচনায় ভাগ করা হবে লাল, হলুদ ও সবুজ জোনে। আবার উপজেলায় ভাগ হতে পারে ইউনিয়ন ভিত্তিক। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউনের কাজ শুরু করেছে সরকার।

সব কিছু ঠিকটাক থাকলে চলতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায়ও জোন ভিত্তিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে। জনসংখ্যা ও আক্রান্তের হার বিবেচনায় সমস্ত দেশের ন্যায় জোন ভিত্তিক ভাগ করা হবে ‘হাওরের উঠান’ খ্যাত দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলাকেও। এ জন্য পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস।

জানা যায়, জনসংখ্যার অনুপাতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী করা হবে কালার মার্ক। লাল বা রেড জোনের এলাকায় থাকবে কঠোর লকডাউন। প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে থাকবে রেড জোনের সম্পূর্ণ এলাকা। এই এলাকা থেকে কোনো মানুষই বাইরের কোনো এলাকায় যেতে কিংবা বাইরের এলাকা থেকে রেড জোন এলাকায় আসতে পারবেন না। বন্ধ থাকতে পারে দোকানপাট। অপরদিকে, আংশিক লক ডাউন থাকবে হলুদ বা ইয়লো জোনের এলাকায়। সীমিতভাবে চলতে পারে জনসাধারণের জীবনযাত্রা। আর স্্বাভাবিক থাকবে সবুজ বা গ্রিন জোন। এ জোনের জনগনের জীবনমান হবে স্বাভাবিক।

উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ১ লক্ষ জনসংখ্যার এলাকায় গত ১৪ দিনে ১০ জন বা তার অধিক করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে তা রেড বা লাল জোনের মধ্যে পড়বে। প্রতি লাখে ৩ থেকে ৯ জন রোগী করোনা ভাইরাস ‘পজেটিভ’ হলে সে এলাকা পড়বে হলুদ বা ইয়লো জোনে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি লাখে ৩ জনের নিচে হলে তা থাকবে নিরাপদ জোন অর্থাৎ সবুজ বা গ্রিন জোনে।

এই হিসাবে প্রথমেই সবুজ সংকেত পেয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা, শিমুলবাক, পাথারিয়া ও পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়ন। এই চার ইউনিয়নে কোনো করোনা ‘পজেটিভ’ রোগী নেই। পশ্চিম বীরগাঁওয়ের টাইলা গ্রামে আক্রান্ত রোগী ছিলেন। বর্তমানে তারা সুস্থ্য হওয়ায় গ্রিন জোনেই যাচ্ছে এই ইউনিয়নটি। ধলমৈষা গ্রামে নতুন করে এক ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ায় প্রায় ১৮ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে একাই ‘হলুদের’ ঘরে যেতে হতে পারে পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নকে। এদিকে, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষা উপজেলার পূর্ব পাগলা, জয়কলস ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ভাগ্যে থাকতে পারে রেড জোন। পূর্ব পাগলা ইউনিয়নে প্রায় ২৮ হাজার জনসংখ্যায় গত ১৪ দিনে আক্রান্ত রোগী ৭ জন, জয়কলস ইউনিয়নে প্রায় ৪৩ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে উপজেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ৯ জন ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে প্রায় ২১ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫ জন।

এ ব্যপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এ ব্যপারে প্রচুর কাজ করছি। প্রচণ্ড ব্যস্ততায় সময় যাচ্ছে আমাদের। এই মূহুর্তে খুব এক্সপ্লেইন করে কিছু বলতে চাচ্ছিনা। গত ১৪ দিনে প্রতি লাখে ১০ জন লোক আক্রান্তের অনুপাত হলে কোন কোন এলাকা রেড জোনে পড়তে পারে যদি কারো কোন ইউনিয়নে কতজন আক্রান্ত জানা থাকে তাহলে তা সহজে তিনি বের করে নিতে পারবেন। তবে রেড জোনে আমাদের উপজেলায় দু’তিনটা ইউনিয়ন পড়তে পারে। যদি রেড জোনে পরে যায় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতায় আগের মতোই কঠোর লকডাউন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। ইয়লো জোন সীমিত আর গ্রিন জোন থাকবে স্বাভাবিক। তবু, সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’

শেয়ার করুন