১২ জুলাই ২০২০


বাড়ছে পানি, ডুবছে জনপদ

শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টির ফলে সুরমা-কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় এ তিন নদীর পানি ৪ পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর সিলেট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ দশমিক ৪ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ দশমিক ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ নদীর পানি শেওলা ও শেরপুর পয়েন্টে এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে অব্যাহত বৃষ্টির ফলে এ নদীর পানি অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট-সুনামগঞ্জসহ দেশের ১১টি জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এছাড়া সোমবারও সিলেট ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টি থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়- গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৫০ মিলিমিটার, লালাখাল ১৪৮ মিলিমিটার, কমলগঞ্জে ১০৮ মিলিমিটার, মনু রেলওয়ে ব্রিজ ১০৪ মিলিমিটার, শেরপুর ৯২ মিলিমিটার, সিলেট ৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, নদ-নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে ভোগান্তি বেড়ে সীমান্ত এলাকার মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। কোথাও কোথাও সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।

গোয়াইনঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ডাউকি, গোয়াইন এবং সারী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবক’টি ইউনিয়নের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। বন্যায় জনগণের দুর্ভোগ লাগবে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পানিবন্দি মানুষজনের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য জানিয়েছেন, উপজেলার ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। মসজিদে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বন্যার পানিতে আটকে পড়ার আগেই যেন মানুষ আশ্রয় চলে যান।

তিনি আরও জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। উপজেলার সকল চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের কাছে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের মাঝে বিতরণ করার জন্য।

আর পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার জানান, টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শেয়ার করুন