৫ নভেম্বর ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটে সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। অপরাধপ্রবণ সংঘবদ্ধ এসব কিশোরের দৌরাত্ম্য থামাতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে নগরীর পীরমহল্লা ও বাদামবাগিচা এলাকায় অভিযান চালিয়ে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসী চক্রের (কিশোর গ্যাং) সদস্য মোহাম্মদ রুমন আহমদ ওরফে মাহমুদুর রহমান রুমনকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি তার সহযোগী মো. বিপ্লবকেও (৪৩) গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে মহানগর ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। আটক রুমন পীরমহল্লা এলাকার মৃত তজম্মুল আলী ওরফে তৈমুছ আলীর ছেলে। অপর আসামী বিপ্লব ছাতক উপজেলাধীন বাগবাড়ী গ্রামের (বর্তমানে বাসা নং- ২০, ফাজিল চিশত, আ/এ) মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে।
নগরবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের উপদ্রব দিন দিন বেড়ে চলেছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট দুর্বৃত্তদের সঙ্গে কিশোরদের সম্পর্ক সৃষ্টির ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠছে তারা। এতে দিন দিন অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, বয়সের কারণে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরদের অনেকক্ষেত্রে বিচারের মুখোমুখি করা যায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সন্ধ্যা নামলেই সিলেট নগরীর অপেক্ষাকৃত কম জনবহুল এলাকায় উঠতি বয়সি কিশোর দল বেঁধে অবস্থান নেয়। ছিনতাই, মাদক সেবন, মাদকদ্রব্য কেনাবেচাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তারা পথেঘাটে দল বেঁধে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। যখন কেউ ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করেন ; তখন তারা তাঁদের কাছে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না পেলে নির্মাণকাজেও বাধাদানের অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া কিশোর গ্যাংগুলোর মধ্যে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা থাকায় অনেক সময় তাদের মধ্যে মারামারিরও ঘটনা ঘটে।
মহানগর ডিবি পুলিশের দাবি, গ্রেফতার হওয়া রুমন উঠতি বয়সী সন্ত্রাসী চক্রের (কিশোর গ্যাং) একজন সক্রিয় সদস্য। বিগত ২/৩ বছর যাবত সে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় থেকে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। মারামারি, সশস্ত্র মহড়া, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবন এবং চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। রুমন পীরমহল্লা এলাকার স্থানীয় একটি চক্রের অনুসারী। গত ২৯ অক্টোবর একজন প্রবাসীর উপর হামলা চালিয়ে আহত করার অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম প্রথমে রুমনকে গ্রেফতার করে। পরে রুমনের তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে তার সহযোগী মো. বিপ্লবকে গ্রেফতার করা হয়। রুমন এসএমপির এয়ারপোর্ট থানায় দায়েরকৃত একাধিক মামলার আসামি। সিলেট মহানগর ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার সহকারি কমিশনার আহমেদ পেয়ার জানিয়েছেন এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।