১৪ নভেম্বর ২০২০


নোমান কোথায়?

শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত যুবক রায়হান হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূঁইয়া ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার আগে কতিত ‘সাংবাদিক’ নোমান ও তার ঘনিষ্ঠজনদের সহযোগিতায় আকবর পালিয়েছিলেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হলেও সেই কোথায় আছেন এর কোন সঠিক তথ্য দিতে পারেনি প্রশাসন।

কিন্তু গ্রেপ্তারের পর আকবর এখন সাত দিনের রিমান্ডে। এ অবস্থায় প্রশ্ন একটাই- তাহলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান কোথায়? আকবর মেঘালয়ে চলে গেলেও নোমান কি দেশে আছেন, এমনটাই এখন সবার ভাবনায়।

মূলত গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের উপর চলা অমানবিক নির্যাতনের চিত্র ধারণ করা সিসিটিভির হার্ডডিস্ক গায়েব করা এ নোমান ১৩ অক্টোবর থেকেই লাপাত্তা। হন্য হয়ে খুঁজলেও এখনো তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে আকবর গ্রেপ্তারের দিন সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। যদিও আকবর গ্রেপ্তারের পরপর নোমান দেশে আছে নাকি সেও ভারতে পালিয়ে গেছে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে- আকবর ভারতে পালালেও নোমান এখনও দেশেই আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৪ অক্টোবর সকালে আকবর ভারতে প্রবেশ করার পর নোমান ফের সিলেটেই ফিরে আসতে পারে এবং সে দেশের ভেতরে কোথাও আত্মগোপনে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে নোমান নারায়নগঞ্জ অথবা গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর এলাকায় একটি দুর্গম বাগান এলাকায় অবস্থান করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন নোমানের পরিচিতজনরা।

একটি সূত্র থেকে জানা যায়, নোমানের শ্বশুর বাড়ি নারায়নগঞ্জ। সে হিসেবে নারায়নগঞ্জের কোথাও অবস্থান করতে পারে। আবার নোমানের নানার বাড়ি গাজীপুর এলাকায়, সেই হিসেবে কালিয়াকৈর এর দুর্গম কোন এলাকায় অবস্থান করতে পারে নোমান।

অপর একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সর্বশেষ নারায়নগঞ্জ এলাকা থেকেই কোম্পানীগঞ্জের আলোচিত ব্যক্তি তাজুল ইসলাম ওরফে পরিবেশ মোল্লার পাঠানো টাকা উত্তোলন করে নোমান। এমনকি বর্তমানে অনলাইনের ‘আজারবাইজার’ নামের একটি সফটওয়ার থেকে কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারির চাঁদাবাজ তাজুল ইসলাম ওরফে পরিবেশ মোল্লার সাথে প্রায়ই যোগাযোগ করে নোমান। এই বিষয়গুলো মাথায় নিয়ে তদন্তকাজ এগুলে হয়তো সাফল্য আসতে পারে বলে ধারণা ওই সূত্রের।

এদিকে আকবর গ্রেপ্তার হওয়ার পর এখন নোমানসহ আকবরের সহযোগিতাকারী সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছেন রায়হানের পরিবার ও সচেতনমহল।

রায়হানের মা সালমা বেগম, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সাম্প্রতিক সময়ে গড়ে উঠা নাগরিক সংগঠন ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ এর সংগঠক আব্দুল করিম কিম আকবরকে পালিয়ে যেতে পরামর্শদাতা ‘সিনিয়র অফিসার’, সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করা নোমানসহ তাকে পালাতে যারাই সহায়তা করেছেন সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

আর সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ সহিদুল ইসলাম শাহিন বলেছেন, কেউ যদি কোন অপরাধীকে সাহায্য করে বা কোন মামলার আলামত নষ্ট করে সে ক্ষেত্রে তাকেও দণ্ডবিধি অনুযায়ী অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই তাকেও মামলার আওতায় আনা উচিৎ।

তবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান বলেন, যেহেতু আকবর এখন রিমান্ডে তাই আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তার মুখ থেকে যাদের নামই বের হবে তাকেই গ্রেপ্তার করা হবে। যেহেতু এখনো মামলাটি একদম প্রাথমিক পর্যায়ে, তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।

শেয়ার করুন