৩০ জানুয়ারি ২০২১
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের করোনাশনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হয়েছিলো বেসরকারি সংস্থা সীমান্তিকে। সেখানে পরীক্ষায় ২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। অথচ পরদিন একই ব্যক্তিদের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হলে ফলাফল নেগেটিভ আসে। এরপর ঢাকার জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এ নমুনা পরীক্ষায়ও এ প্রবাসীদের করোনা নেগেটিভ আসে। ফলে সীমান্তিকের করোনার নমুনা পরীক্ষার মান ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠেছে।
এ অবস্থায় সীমান্তিকে আপাতত বিদেশযাত্রীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করানো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া সীমান্তিকের করোনা পরীক্ষার মান যাছাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ডিসেম্বর সিলেটের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সীমান্তিককে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। দেশের রোগীদের পাশপাশি বিদেশযাত্রীদের করোনা পরীক্ষাও অনুমোদন দেওয়া হয় এই প্রতিাষ্ঠানকে। এরপর নগরের মাছিমপুর এলাকায় জেলা পরিষদের জায়গায় বুথ খুলে করোনার নমুনা সংগ্রহ শুরু করে সীমান্তিক।
দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার নিশ্চয়তায় সীমান্তিকে করোনার পরীক্ষা শুরুতে অনেকে স্বস্থিবোধ করলেও গত ২৪ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানটির করো্না পরীক্ষার মান নিয়েই প্রশ্ন ওঠেছে।
জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসা সিলেটের ১৫৭ যাত্রীর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে ২৪ জানুয়ারী সীমান্তিকের ল্যাবে করোনা শনাক্তকরণ নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়। তবে ২৫ জানুয়ারি শাবিপ্রবির ল্যাবে এবং ২৬ জানুয়ারি আইইডিসিআর’র ল্যাবকে এই ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২৫ জনেরই করোনা নেগেটিভ আসে।
সীমান্তিকের ল্যাবে পজিটিভ আসা প্রবাসীদের অন্য দুটি ল্যাবে করোনা নেগেটিভ আসায় নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আইইডিসিআর’র একটি দল সীমান্তিকের ল্যাব পরিদর্শনও করে। এ অবস্থায় সীমান্তিকের ল্যাবে আপাতত বিদেশযাত্রীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সীমান্তিকে আপাতত বিদেশযাত্রীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সীমান্তিক থেকে গত বৃহস্পতিবার আমাদের একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে জানানো হয়েছে তাদের নমুনা পরীক্ষার কিটে সমস্যা থাকতে পারে। এজন্য কিট সরবরাহকারী এজেন্ট পরিবর্তন করেছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে সীমান্তিকের ল্যাবের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির উপ নির্বাহী পরিচালক পারভেজ আলমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে সীমান্তিকের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমদ বলেন, সীমান্তিকের ল্যাব ও কিট আইইডিসিআর থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফলে এখানে পরীক্ষায় কোনো সমস্যা থাকার কথা না। বিদেশযাত্রীদের পরীক্ষা বন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।