৩০ এপ্রিল ২০২১
ডেস্ক রিপোর্ট : তাহলে কী পাল্টে যাচ্ছে সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের দৃশ্যপট? সম্প্রতি সিলেট ৩ আসনের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর সহধর্মিনী ফারজানা সামাদ চৌধুরীর এক বিবৃতির পর সিলেট-৩ নির্বাচনী এলাকাসহ পুরো সিলেট জুড়ে এমন প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ফারজানা সামাদ চৌধুরীর নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশের মধ্য দিয়ে এই আসনের আওয়ামীলীগের একটি বড় মেরুকরণ সৃষ্টি হতে পারে। পাল্টে যেতে পারে অনেক দৃশ্যপট।
সিলেট ৩ আসনের সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর সহধর্মিনী ফারজানা সামাদ চৌধুরী বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আসছে উপ নির্বাচনে নিজেকে একজন প্রার্থী হিসেবে দাবী করে সর্বস্তরের জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা চান।
এতে তিনি উল্যেখ করেন- ‘পরম করুণাময়ের ইচ্ছায় সিলেট-৩ আসনের গণমানুষের নেতা, এই জনপদের পর পর ৩ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী আকষ্মিকভাবে আমাদেরকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন। আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাবিধুর এই সময়টিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর নেতৃত্বাধীন সদাসয় সরকার এবং সিলেট-৩ আসনের আপনার জনতাসহ সর্বস্তরের সিলেটবাসী আমি ও আমার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রদান করেছেন। শোকেস্তব্ধ আমি ও আমার সন্তানসহ প্রয়াত এমপি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর পুরো পরিবার ও স্বজনরা এজন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞ ও চিরঋণী। সবার কাছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে দোয়া প্রার্থী আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন আমাদেরকে এই শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি দান করেন।
বিবৃতিতে ফারজানা চৌধুরী বলেন, বিগত প্রায় ৪ দশক সিলেট-৩ নির্বাচনী এলাকা তথা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের আপামর জনতার সুখ-দুখের সাথী ছিলেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী। দীর্ঘ এই সময়ের পরিক্রমায় এই জনপদের মাটি ও মানুষের শুধু নেতা হিসেবে নয়, একজন সুহৃদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় ও উদার সহযোগিতায় মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী তার নির্বাচনী এলাকায় বিপুল উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু করেছিলেন, যার অনেকগুলো ইতোমধ্যে সফল ও সুচারুরূপে সম্পন্ন হয়েছে এবং অনেকগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন- দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলাবাসীর প্রাণের মানুষ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর অবর্তমানে তার স্বপ্নের উন্নয়ন কর্মকান্ড যেন গতিরুদ্ধ না হয়, সেটি নিশ্চিত করা সময়ের দাবী। মাহমুদ-উস-সামাদের আকষ্মিক মৃত্যুতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা অপূরণীয়। এরপরও জীবন থেমে থাকেনা। সময়ের প্রয়োজনে দায়িত্ব গ্রহণে এগিয়ে যাওয়াই চিরন্তন সত্য। এই সত্যের প্রেক্ষিতে সময়ের প্রয়োজনে আমি ব্যক্তিগতভাবে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জবাসীর পাশে থাকতে চাই।
ফারজানা চৌধুরী বলেন, মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর জীবদ্দশায় তার জীবন সঙ্গীনী হিসেবে তার সকল কর্মকান্ডে অতীতে যেমন পাশে ছিলাম, আগামী দিনেও একই ভাবে দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জবাসীর কাছে থাকতে আমি আগ্রহী। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও আশীর্বাদ পেলে মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী এমপির অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজগুলো সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে আমি আগামীদিনে সিলেট-৩ নির্বাচনী এলাকার জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। আমার আগামী দিনের পথচলায় সিলেট-৩ নির্বাচনী এলাকার সর্বস্তরের মানুষের দোয়া, সমর্থন ও সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’
তার এই বিবৃতি গণমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচার হয়। এতেই শুরু হয় আলোচনা। স্থানীয় আওয়ামীলীগের একাধিক নেতার সাথে আলাপ করলে তারা জানান, ফারজানা সামাদ চৌধুরী প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর খুব কাছে থেকে এলাকার মানুষের সুখ দুঃখের কথা জেনেছেন এখন তিনি সরাসরি মানুষের জন্য কাজ করতে চাচ্ছেন। তাকে সবাই সহযোগীতা করা উচিত।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক সিলাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকরাম হোসেন বখত বলেন, সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরীর সহধর্মিনী ফারজানা সামাদ চৌধুরী নির্বাচন করবেন এটা আমাদের জন্য সুখবর। তিনি নির্বাচিত হয়ে আসলে এলাকার উন্নয়ন হবে। সব চেয়ে বড় কথা হলো ফারজানা সামাদ চৌধুরীকে মনোনয়ন দিলে বর্তমানে যে একাধিক প্রার্থী মাঠে আছেন তাদের মধ্যে ঐক্য তৈরি হবে। তা না হলে দলে বিদ্রোহী হবার সম্ভাবনা রয়েছে।