১৯ মে ২০২১
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জে থেমে নেই খুন। একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। কয়েকদিন পরপর কোথাও না কোথাও এসব ঘটনা ঘটে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে হচ্ছে আলোচিত-সমালোচিত। আবার কোনো ঘটনা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। কখনো ভাগ্নের হাতে মামা, কখনো ভাইয়ের হাতে ভাই খুন। তবে বেশির ভাগ খুনের ঘটনা ঘটছে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে। এতে করে সাধারণ মানুষ থেকে সচেতন মহলের মধ্যে প্রবল উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
জানা যায়, গত ১১ মে জেলার আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কামাল মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে আহত হন অন্তত আরও ৩০ জন।
ওইদিন সকালে উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের রাহেলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহত একই গ্রামের ইয়াকুল আলীর ছেলে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ অন্তত ১২ জনকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রাহেলা গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য শের আলী এবং আনু মিয়ার মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে কাকাইলছেও বাজারে ভূঁইয়া মার্কেট এলাকায় শের আলী এবং কামাল মিয়ার মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এর জের ধরে মঙ্গলবার সকালে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ফিকলের আঘাতে কামাল মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এরপর দিন ১২মে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় পূর্ব বিরোধের জেরে ভাগ্নের ফিকলের আঘাত মামা কালু মিয়ার (৬০) মৃত্যু হয়েছে । উপজেলার পুরাণ পাথারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ভাগ্নে জাহির মিয়াকে পুলিশ আটক করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পুরাণ পাথারিয়া গ্রামের কালু মিয়া সম্পর্কে জহিরের চাচাতো মামা। আগে থেকেই দুইজনের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার পর বুধবার ধানের খড় শুকানোর কাজে ব্যবহৃত লাঠির মাথায় লাগানো লোহার ফিকল দিয়ে জহির তার মামা কালু মিয়ার বুকের বামপাশে আঘাত করেন। পরে তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সর্বশেষ মঙ্গলবার হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাকবিতণ্ডার জের ধরে ছুরিকাঘাতে যুবকের নাম সজিব আহমেদ (২০) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন। রাতে ভাটি শৈলজুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সজিব আহমেদ ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার বড়ইকান্দি গ্রামের কাজীবুর রহমানের ছেলে। এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ হামলাকারী যুবক লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে কাদির আহমেদ উজ্জ্বলকে (২৭) আটক করেছে।
এলাকাবাসী জানান, সজিব সম্প্রতি সদর উপজেলার শৈলজুড়া গ্রামের মানিক মিয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। একপর্যায়ে মানিক মিয়ার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু বিয়েতে রাজি হননি তার বড় মেয়ের জামাতা কাদির আহমেদ উজ্জ্বল।
সদর থানার ওসি মো. মাসুক আলী জানান, ঘটনাস্থল থেকেই হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। নিহত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।