২৬ আগস্ট ২০২১


নৌকার পালে হাওয়া, শান দেয়া হচ্ছে লাঙ্গলে, জয় পেয়ে মরিয়া শফি

শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : সর্বশেষ গত ২৮ জুলাই হবার কথা ছিলো সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। কিন্তু প্রচারণার শেষ দিনে করোনা মহামারী বিবেচনায় হাইকোর্টের নির্দেশে পাল্টে যায় নির্বাচনের দিনক্ষণ। অনিশ্চয়তায় পড়েন প্রার্থীরা।
সেই অনিশ্চয়তা কাটিয়ে এবার আগামী ৪ সেপ্টেম্বর এ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন।

এদিকে নতুন দিন-তারিখ ঘোষণার কদিন আগেই কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমনে ফুরফুরে মেজাজে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। আর অন্য প্রার্থীরা কৌশলী প্রচারণায় ব্যস্ত থাকলেও পড়েছেন বিপাকে।

এ আসনের দিনক্ষণ যখন একদম নিকটে তখন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও শোক দিবসের কয়েকটি সভায় যোগ দিতে সিলেট এসেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ময়মনসিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কেন্দ্রীয় সদস্য আজিজুস সামাদ ডন। সিলেটে দুই দিন অবস্থান করে এসব নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সভায় যোগ দেন এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবকে বিজয়ী করতে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেন।

কেবল তাই না, বুধবার সিলেটে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আগমনের তালিকায় আছেন ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক। এমন অবস্থায় নৌকার পালে হাওয়া লাগলেও লাঙ্গলে শান দেওয়ার চেষ্টা করছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টির প্রতি জনগণের ভালবাসা আছে। এ আসন জাতীয় পার্টির দুর্গ। মাটি ও মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক। তাছাড়া আগামী ৩০ তারিখ জাতীয় পার্টির মহাসচিবসহ ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সিলেটে আসবেন। ১ সেপ্টেম্বর তারা আমার হয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন।’

অপরদিকে দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করা শফি আহমদ চৌধুরী দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাই চালাচ্ছেন প্রচারণা। দলীয় কোন নেতাকর্মী নেই তাঁর পাশে। তবে গোপনে কিছু নেতাকর্মী তাকে সমর্থন জানাচ্ছেন বলে জানিয়েছে শফি আহমদ চৌধুরীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একটি সূত্র। এমনকি অতীতে নিজের গ্রহণযোগ্যতা কাজে লাগিয়ে জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে কাজ করছেন তিনি।

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া। এঁদের মধ্যে জুনায়েদের তৎপরতা নেই বললেই চলে। বাকি তিন প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন ভোটের মাঠে।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিন নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অনুমতি পেলেও লকডাউন উঠার পর থেকেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রধান তিন প্রার্থীই প্রতিদিন প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। কখনো কর্মীসভা, কখনো স্থানীয় কারো মৃত্যুতে শোকসভাসহ বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁরা। আবার কেউ কেউ নির্বাচনী সভা, জনসংযোগও করছেন।

এর আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে এ বছরের ১১ মার্চ সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর ৯০ দিন পেছালেও কয়েক দফায় ভোটগ্রহণের তারিখ পিছিয়ে অবশেষে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর আসছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।

শেয়ার করুন