২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১


সেতু সেই, নদীর দুপাড়ে রশি বেঁধে চলছে নৌকায় পারাপার

শেয়ার করুন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : নদীর দুই পাড়ে বাঁধা আছে একটি রশি। সেই রশির সাহায্য নিয়ে পার হচ্ছে নৌকা। আর এই নৌকা পার হয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন শত শত মানুষ। গত ৫০ বছর ধরে চলছে একই অবস্থা। নদীটির নাম খাসিয়ামারা। আর এই নদীর দুপাশে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দুই গ্রাম আলীপুর ও টেংরাটিলা। একটি সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ।

জানা যায়, টেংরাটিলা-আলীপুর বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে চলা খাসিয়ামারা নদীতে সেতু না থাকায় এই খেয়াঘাট দিয়ে রশি টেনে খেয়া পারাপার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে নদীতে অনেক পানি আর স্রোত থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হাওরপাড়ের জনসাধারণকে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় এই নদী। খাসিয়ামারা নদী পার হয়েই এই এলাকার মানুষদের যেতে হয় দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর ও জেলা সদরে। আর যোগাযোগের এই নাজুক ব্যবস্থার কারণে কৃষক ও মৎস্য খামারিদের গুনতে হয় বাড়তি খরচ।

স্থানীয়রা জানান, এই নদীতে দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানানো হলেও তা পূরণ হয়নি। এতে সুরমা ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের টেংরাটিলা, আলীপুর, আজবপুর, গিরিসনগর, পশ্চিম টিলাগাঁও, নূরপুর, সোনাপুর, নন্দীগ্রাম, সুলতানপুর, বড়কাটা, বৈঠাখাই, হাছনবাহার, এরুয়াখাই, রসরাই, সোনাপুরসহ এলাকার অন্তত ২০-২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।

আলীপুর গ্রামের মৎস্য খামারি আব্দুর রহিম বলেন, ‘সেতু না থাকায় আমরা যে কত দুর্ভোগে আছি তা আমরাই জানি। কিন্তু তা দেখার মতো কেউ নেই। পুরো বছরই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে নদী পারাপার হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। ছেলে মেয়েদের স্কুলে যাতায়াত, মৎস্য খাদ্য পরিবহন সবকিছুতেই গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ।’

হাছনবাহার গ্রামের বাসিন্দা রহমত মিয়া জানান, অনেক সময় নদী পার হতে গিয়ে দড়ি ছিড়ে যায়। সবসময় আতঙ্ক নিয়ে নদীটি পার হতে হয় বেলে জানান তিনি।

নূরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ মশিউর রহমান বলেন, ‘খাসিয়ামারা নদীতে সেতু হলে হাওরপাড়ের শিক্ষা, যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটতে পারে।’

আজবপুর গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমি একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করি। তাই প্রতিদিন আমাকে এই নদীটি পার হয়ে মাদরাসায় যেতে হয়। অনেক সময় খেয়া নৌকা ঘাটে থাকে না। ফলে আমি ঠিক সময়ে মাদরাসায় যেতে পারিনা।’

শেয়ার করুন