২৩ নভেম্বর ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ও আইনী বিভাগের প্রধান হুমায়ুন কবীর এবার পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে গত শনিবার তিনি ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্রটি জমা দেন।
পদত্যাগ পত্রে তিনি জানান, বিগত বছরগুলোতে একাধিকবার তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য মৌখিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানালেও বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে অব্যাহত রেখেছেন। বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেয়ার আগে ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত একটি পত্রের নির্দেশনা অমান্য করে আইন বিভাগে পঞ্চাশের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের প্রদত্ত বাঁধা নিরসনের জন্য বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আমার ভূমিকা যথাযথ নয় বলে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিয়মান হওয়ায় সার্বিক কল্যাণার্থে তিনি বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করছেন বলে পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করেন।
এদিকে, গত ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতিতে বিভাগটির ১৪৮ জন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় রয়েছে। এসময় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের চারটি সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, উচ্চ আদালত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা বার কাউন্সিলে পরিশোধের জন্য নির্দেশ দিলেও কর্তৃপক্ষ জরিমানা পরিশোধ করছেন না। আগামী তিন দিনের মধ্যে (রোববার পর্যন্ত) সমাধানের কোনো সিদ্ধান্ত না এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্যে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ২০১৪ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি সেমিস্টারে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি না করার নোটিশ জারি করে। কিন্তু এমন নির্দেশনা না মেনে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ আইন বিভাগের ২১, ২২, ২৩ ও ২৪তম ব্যাচে ৫০ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভর্তি করে। এতে চার ব্যাচের নির্দিষ্ট সময়ে পড়াশোনা শেষ করেও ৫০ জনের অধিক ভর্তি হওয়া ১৪৮ জনের আবেদন জমা নেয়নি বার কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রায় ৮ মাস আগে ১৪৮ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে উচ্চ আদালতে রিট করেন ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ জরিমানার টাকা আগামী ২ জানুয়ারির মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তবে জরিমানার টাকা পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থায় ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই ১৪৮ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শহীদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য টাকার জোগান দেন না। যে সময় এমন ঘটনা ঘটেছে, সে সময় তিনি ছিলেন না। সে সময় কী হয়েছে না হয়েছে, সেটি তাঁর জানা নেই। এত টাকা কোথায় পাবেন, যেখানে তাঁরা নিজেরাই ১৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। দেড় বছর ধরে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানের খবর নেই। তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমার পুরো সিম্প্যাথি (সহানূভূতি) রয়েছে। কিন্তু কিছু করারও তো নেই। ছাত্রদের টাকার দরকার।’