১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২


করোনার টিকাদানে পিছিয়ে সিলেট

শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : করোনার টিকাদানে সিলেট পিছিয়ে রয়েছে বলে জনিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়াতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতি অনুযায়ী নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতেও বলেছেন তিনি। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিলেটে দুই দিনব্যাপী কোভিড-১৯ টিকাদানবিষয়ক বিভাগীয় ‘রিভিউ মিটিং’ অনুষ্ঠিত হয়।

মিটিং সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে বিভাগের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫১ শতাংশ টিকাদানের আওতায় এসেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় বিভাগটি টিকাদানে পিছিয়ে পড়েছে।‘

রিভিউ মিটিংয়ে’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার টিকা প্রয়োগ বিষয়ক কমিটির সভাপতি ও অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা টিকাদানে সিলেটের পিছিয়ে থাকার বিষয়টি বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের জানান। ওই সময় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতি অনুযায়ী নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে টিকা প্রয়োগে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন মীরজাদী সেব্রিনা।

সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সিলেটসহ সারা দেশে করোনার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া শুরু হয়।

পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট বিভাগের জনসংখ্যা ১ কোটি ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৫ জন। এর মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভাগে ৫৯ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯৯ ডোজ করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫১ শতাংশ।তবে ১২ বছরের বেশি বয়সীদের নিয়ে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮১ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৫ জন। লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে ৭২ শতাংশ মানুষ করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। বর্তমান অনুপাতে টিকা কার্যক্রম চলতে থাকলে প্রথম ডোজের টিকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরও সাড়ে চার মাস সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।গত বছরের ৮ এপ্রিল থেকে সিলেটে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। চলতি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ১০ মাসে ৩৭ লাখ ৩ হাজার ২৫০ জনকে করোনার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে।

যা দ্বিতীয় ডোজের লক্ষ্যমাত্রার ৪৫ শতাংশ। চলমান হারে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া অব্যাহত থাকলে দ্বিতীয় ডোজের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে আরও এক বছর লাগবে।১২ বছরের বেশি বয়সীদের নিয়ে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮১ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৫ জন। লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে ৭২ শতাংশ মানুষ করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে প্রথম ডোজের টিকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে আরও সাড়ে চার মাস সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বিভাগে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৭২৯ জন বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় দেওয়া হয়েছে ৪৫ হাজার ৪৪৪ জন, সুনামগঞ্জে ১৬ হাজার ২৪২, হবিগঞ্জে ২০ হাজার ২৮ ও মৌলভীবাজার জেলায় বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে ২৯ হাজার ১৫ জনকে।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কাগজে-কলমে প্রথম ডোজ টিকা প্রাপ্তির সংখ্যা ৭২ শতাংশ হলেও প্রকৃতপক্ষে সংখ্যাটি আরও বেশি। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, এ অঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রবাসে থাকেন। সিলেট জনশক্তি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভাগে ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭৮১ জন নিবন্ধিত প্রবাসী রয়েছেন। এর বাইরে আরও প্রায় ৬ লাখ প্রবাসী রয়েছেন।সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক হিমাংশু লাল রায় বলেন, প্রবাসীদের কারণে সিলেট বিভাগ টিকা প্রাপ্তির হারে পিছিয়ে রয়েছে। বিভাগে মোট কত জন প্রবাসে রয়েছেন, তার নির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই।

এছাড়া ১২ বছরের কম বয়সীদের বিভাগের বাসিন্দা ধরার কারণেও টিকা প্রাপ্তির হার আরও কমে গেছে। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভাগটি ভালো অবস্থানে চলে আসবে।হিমাংশু লাল রায় জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে শতভাগ টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা না গেলেও বিভাগের কত জন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং কত জনকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি, সেটা নিশ্চিত করে বলা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

শেয়ার করুন