২৩ মার্চ ২০২২


স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানী, শিক্ষক বরখাস্ত

শেয়ার করুন

লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের লাখাইয়ে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মুমিনুল হক নামে এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যৌন হয়রানির ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জেলা প্রশাসক ও লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বুধবার দুপুরে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। বরখাস্ত মুমিনুল হক ওই উপজেলার বামৈ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রী বামৈ সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তাকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন শিক্ষক মুমিনুল হক। তাকে একাধিকবার যৌন হয়রানিরও চেষ্টা করেছেন তিনি। এ কারণে ওই ছাত্রী মুমিনুলকে এড়িয়ে চলতেন।

গত ১৬ মার্চ সকালে স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ চলাকালে শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় ওই ছাত্রী স্কুলভবনের তৃতীয় তলার শ্রেণিকক্ষে বসেছিল। সঙ্গে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীও ছিল। এ সময় সহকারী শিক্ষক মুমিনুল হক গিয়ে অন্য শিক্ষার্থীদের বের করে দেন। তিনি ওই ছাত্রীর কাছে গিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত দেখান। এক পর্যায়ে তার হাত ধরেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী সেখানে গেলে মুমিনুল হাত ছেড়ে দিয়ে নিচে চলে যান।

শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ও আয়া গৌড়ী নেমে পড়লে তিনি ফের গিয়ে ওই ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরেন। তখন ওই ছাত্রী চিৎকার শুরু করলে মুমিনুল হক তার মুখ চেপে ধরেন। তার চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল করিমসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মুমিনুল ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে জানানোর পরও তিনি মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত ও তার বিচার দাবিতে বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ-লাখাই-সড়াইল-নাসিরনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফ উদ্দিন। তিনি তাৎক্ষণিক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে।

যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমি ঢাকায় চাকরি করি। খবর পেয়ে গত রোববার বাড়ি আসি। মঙ্গলবার ইউএনও ও জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এ আইনের আশ্রয় নেব।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। মেয়ে তো এমনি এমনিই অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরীফ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে এরই মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরথাস্ত করা হয়েছে। তবে ফৌজদারি অপরাধের বিষয়টি আইন অনুযায়ী চলবে।

শেয়ার করুন