৩০ মার্চ ২০২২


ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যাকান্ডে চার আসামীর মৃত্যুদণ্ড

শেয়ার করুন

ডেস্ক রিপোর্ট : ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো—আবুল হোসেন, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, মামুনুর রশীদ ওরফে হারুনুর রশীদ ও ফয়সাল আহমদ। তাদের মধ্যে আবুল খায়ের কারাগারে আছেন। অপর তিন আসামি পলাতক।

বুধবার দুপুরে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এই রায় ঘোষণা করেন।

এদিকে অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় ফারাবী সাফিউর রহমানকে খালাস দিয়েছে আদালত। কারাবন্দি অবস্থায় এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈনের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন বলেন, পলাতকদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করেছেন আদালত। অনন্ত হত্যা মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আবুল খায়ের রশীদ আহমেদের আইনজীবী এ্যডভোকেট আব্দুল আহাদ বলেন, এই মামলার রায়ে আমরা অসন্তোষ্ট ও সংক্ষুবদ্ধ। আমার মোয়াক্কেলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোন অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেন নাই। আমার মোয়াক্কেল দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। ঘটনার দিন এবং সময়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসে অধ্যায়নরত ছিলেন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককরা লিখিতভাবে প্রত্যয়নও দিয়েছেন, এমনকি ক্লাসে উপস্থিতির হাজিরা রেজিষ্ট্রারের কপিও আদালতে পেশ করা কয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ দেড়বছর মামলাটি তদন্ত করলেও তিনি রহস্যজনক কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপস্থিতির বিষয়টি আমলে নেননি। আমার মোয়াক্কেল ঘটনার সময়ে ক্লাসে ছিলেন বলে তার সহপাঠিরা আদালতে স্বাক্ষ্যও দিয়েছেন। এমনকি ফরেনসিক রিপোর্টেও তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তার পরও সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। ইনশাআল্লাহ আমরা উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাব।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

অনন্ত হত্যা মামলায় ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরে ১৪ মার্চ পলাতক তিন আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

শেয়ার করুন