১০ মে ২০২২
ডেস্ক রিপোর্ট : প্রথম দিনেই পেছালো সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ। প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল রায়হানের মা সালমা বেগম, স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী ও রায়হানের চাচা শ্বশুরের। এজন্য আসামিদেরও আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু আসামি পক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে যাওয়া এবং এক আইনজীবীর মৃত্যুতে কোর্ট রেফারেন্স থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
মঙ্গলবার ছিল এই হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নওশাদ আহমেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য এদিন রায়হানের মা, স্ত্রীসহ ৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু একজন আইনজীবী মৃত্যুতে কোর্ট রেফারেন্স চলায় সাক্ষ্য হয়নি। তাছাড়া আসামিদের আইনজীবীরা আদালতে একটি দরখাস্ত দিয়ে জানিয়েছেন, মামলার চার্জ গঠনের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশনে গিয়েছেন। কিন্তু এই মর্মে কোনো কিছু আনেননি আদালত। এ অবস্থায় আদালতের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়। মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ বুধবার কিংবা বৃহস্পতিবার তারিখ ধার্য রয়েছে।
তিনি বলেন, রায়হান হত্যা মামলায় হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন তৎসহ ৩০২ দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারা ও ২০১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আসামিপক্ষ শুধুমাত্র হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলাটি চালাতে চান। এজন্য অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে গেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, রায়হান হত্যা মামলায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহিমের আদালতে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে রায়হান হত্যা মামলার বিচার শুরু করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরদিন ১১ অক্টোবর সকালে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রায়হান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি থানায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি প্রথমে পুলিশ তদন্ত করে। এরপর বছরের ১৩ অক্টোবর স্থানান্তর হয় পিবিআইতে। গত বছরের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন ১ হাজার ৯শ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ এবং কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।