৮ জুন ২০২২
ডেস্ক রিপোর্ট : নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রাচীনতম দিঘি ধোপাদিঘী এবার নান্দনিক রূপে ফিরছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনায় নতুন রূপ পেয়েছে এই দিঘী। আগামী ১১ জুন শনিবার ধোপাদিঘীর উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এসময় উপস্থিত থাকবেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদিঘি’ শীর্ষক প্রকল্পে ভারত সরকার ৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬ কোটি টাকাসহ মোট ব্যয় হয় ১৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এছাড়াও সিসিকের আওতাধীন চারাদিঘির পাড় মজলিশ আমিন স্কুল ভবন নির্মাণে ৬ কোটি ও সিসিকের আধুনিক সুইপার কলোনি নির্মাণ প্রকল্পে ৬ কোটি টাকাসহ মোট ৩টি প্রকল্পে ভারত সরকার ২১ কোটি ৮৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা অর্থায়ন করে। ওইদিন ৬ তলা বিশিষ্ট চারাদিঘীরপার স্কুল ও কাষ্টঘর সুইপার কলোনিও উদ্বোধন হবে।
সিসিক সূত্র জানায়, দখল, দূষণ আর ভরাটে এই ধোপাদিঘী পড়েছিল অস্তিত্ব সংকটে। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পরিকল্পনায় নতুন রূপ পেয়েছে ধোপাদিঘি। নগরীর মানুষকে নির্মলতার স্বাদ দিতে এই দিঘিকে বদলে দেওয়া হয়েছে নান্দনিকতায়। দিঘির চারপাশে প্রায় ৫শ’ মিটার দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। দিঘিতে নামার জন্য রয়েছে সুদৃশ্য দু’টি ঘাট। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য রাখা হয়েছে টাইলস বসানো বেঞ্চ, রয়েছে টয়লেটও। ধোপাদিঘি এলাকায় সিটি করপোরেশনের মসজিদের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবেশের পথ রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা বেলায় দিঘি এলাকায় থাকছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা। তবে শিশুদের খেলার জায়গা ও দিঘির পানিতে প্যাডেল বোট রাখার কথা রয়েছে।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, সিলেটের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল ঘেষা নগরীর প্রাচীনতম দিঘী ধোপাদিঘির নামেই ওই এলাকার নামকরণ হয় ধোপাদিঘীর পাড়। একসময় ধোপা সম্প্রদায়ের লোকজন এই দিঘীঅর পানি ব্যবহার করতেন। এতে প্রায় ৬ একর জমি রয়েছে ধোপাদিঘিতে, তন্মধ্যে ৫ একরের মালিকানা সিসিকের, আর ১ একর জমি ধোপা সম্প্রদায়ের লোকজনের নামে রয়েছে। এই দিঘীর উত্তর ও পূর্বাংশে মার্কেট, দোকানপাট গড়ে ওঠেছে; দক্ষিণে আছে ওসমানী শিশু পার্ক। দখল আর অবৈধ স্থাপনায় দিঘীটি মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল। ২০১৮ সালে দিঘীটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সিলেট সিটি করপোরেশন।
‘বিউটিফিকেশন অব ধোপাদীঘি’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয় সিসিক। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ২০১৮ সালের শেষদিকে ধোপাদিঘী দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় সিসিক। কিন্তু পরবর্তীতে ওই প্রকল্পের কাজ গতি হারায়।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আবার পুরোদমে শুরু হয় এ প্রকল্পের কাজ। প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ, এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। এরপর সেটা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানায় সিসিক।