রুমা রায় চৌধুরী (রুমা চক্রবর্তী), বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতির শ্রেষ্ট সন্তান। বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দীর্ঘ কর্মজীবনে যার সফলতা আকাশচুম্বী। কোন প্রলোভনই তাকে ক্ষনিকের জন্য আদর্শ বিচ্যুৎ করতে পারে নি। আজীবন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে লালন করে নিজের অবস্থান থেকে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।
তার কর্মজীবনের সফতার করনে রয়েছেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের তালিকায়। তৃণমূলের নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করায় এই যাত্রায় সততার পুরষ্কার হিসেবে তাকে মনোনয়ন দিতে পারে আওয়ামীলীগ। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখার রুমা চক্রবর্তী সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার কালিগঞ্জের মৌজপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী ও মাতা সরুজু বালা রায় চৌধুরীর পাঁচ কন্যার মধ্যে চতুর্থ। বাবা বরীন্দ্র রায় চৌধুরী সিলেট পৌরসভায় ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত (আমৃত্যু) এম. বি. ডাক্তার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অবিভক্ত ভারতে কাকা (চাচা) গিরিন্দ্র রায় চৌধুরী নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুর ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগদান করেন। গোপন বিপ্লবী আন্দলনের সাথে যুক্ত থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তিনি নিখোঁজ হন। রুমা চক্রবর্তী একাত্তরে স্কুল ছাত্রী ছিলেন।
দেশের টানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এছাড়া আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য আগে থেকেই নিজেকে তৈরি করেন এই সাহসী নারী। বিয়ের পর থেকে তিনি রুমা চক্রবর্তী হিসেবে পরিচিত। বাবা রবীন্দ্র রায় চৌধুরী এবং মা সরজ বালা চৌধুরী।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন রুমা রায়। তিনি ঢাকায় বড় বোনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করার কারণে তৎকালীন আন্দোলন-সংগ্রামের সাথে জড়িয়ে পড়েন। রুমা মিরপুর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার প্রশিক্ষণ নেন।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে ঢাকা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়েও নার্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে সহকারী সেবিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কাঠের বন্দুক নিয়ে প্রশিক্ষণ নেন কিশোরী রুমা রায়।
আজকের সিলেট/আরকেসি