সিলেটে কিশোরীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালামকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার ভোরে গোলাপগঞ্জ থেকে তাকে আটক করা হয়।
এরপর দুপুর ২টার দিকে র্যাব-৯ এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে ইউং কমান্ডার মো. মমিনুল হক বলেন, কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর গা ঢাকা দেন আব্দুস সালাম। পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় ভিকটিমের মা মামলা দায়ের করলে ছায়া তদন্তে নেমে গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাবের বিশেষ টিম। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে। কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণে জড়িত অপর আসামিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির এক কিশোরীকে ভালো কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২২ দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে সিলেটের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালাম ও তার সহযোগীরা। ঘৃণ্য অপরাধে তাদের সহযোগিতা করেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম। তিনি ফুসলিয়ে ওই কিশোরীকে আবদুস সালামের হাতে তুলে দেন। আবদুস সালাম তার বাসায় আটকে রেখে সহযোগীদের নিয়ে টানা ২২ দিন সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে ওই কিশোরী মুক্ত হলেও কয়েকদিন পর ফের আবদুস সালাম তাকে তুলে নিয়ে আবদুল মনাফের সহযোগিতায় হবিগঞ্জে আটকে রাখেন। সেখানে আবদুস সালাম, আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত কয়েকজন মিলে ফের ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে।
প্রায় দুই মাস নির্যাতনের পর গত ২৬ মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে বন্দিদশা থেকে ভিকটিম পালিয়ে আসে এবং তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা মায়ের কাছে খুলে বলে।
এ ঘটনায় গত ২৯ মার্চ কোতোয়ালি থানায় তিনজনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন তরুণীর মা।
মামলার প্রধান আসামি আবদুস সালাম সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ৭০ নম্বর বাসার গাজী আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
অন্য আসামিরা হলেন- সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ২৭ নম্বর বাসার ইশাদ মিয়ার ছেলে আবদুল মনাফ (৩৮) ও ধর্ষণের ঘটনার সহযোগী নগরের ঘাসিটুলার মতিন মিয়ার কলোনির রেখা বেগম (৩০)।
এদিকে, ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালামকে বহিষ্কার করেছে মহানগর কমিটি। সেই সঙ্গে ওয়ার্ড কমিটিও বিলুপ্ত করেছে মহানগর কমিটির নেতারা।
বহিষ্কার আবদুস সালাম সিলেট নগরীর লালাদিঘীরপাড় ৭০ নম্বর বাসার গাজী আবদুর রহিমের ছেলে। তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
র্যাবের হাতে আটকের পর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়ে ব্যাপক তথ্য দেন আব্দুস সালাম। এভাবে চাকরির প্রলোভন দিয়ে অসংখ্য তরুণীর সর্বনাশ ঘটিয়েছেন তিনি। আর তাকে সহযোগিতা করতেন একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম। বর্তমানে রেখা ও মনাফ পলাতক রয়েছেন। আটক আব্দুস সালামকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু বলেন, গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুস সালামকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই ওয়ার্ডের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
আজকের সিলেট/ডি/এসটি