মামলা থেকে 'রেহাই পেলেন' লুনা-এনাম-মুক্তাদির-আরিফ
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২২

সিলেটে ৬৮ মামলা বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মী আসামী

মামলা থেকে 'রেহাই পেলেন' লুনা-এনাম-মুক্তাদির-আরিফ

সাদিকুর রহমান চৌধুরী

প্রকাশিত: ২২/০১/২০২৪ ০৬:২১:৪৫

মামলা থেকে 'রেহাই পেলেন' লুনা-এনাম-মুক্তাদির-আরিফ

তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, আরিফুল হক চৌধুরী, আব্দুল রাজ্জাক, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী। ছবি : সংগ্রহ


গত বছরের ২৮শে অক্টোবর থেকে বিএনপি সরকার পতনের চুড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত সিলেটে ৬৮টি মামলায় সহস্রাধিক আসামী হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই জেলে খেটে জামিনে বেরিয়েছেন আর এখন পর্যন্ত কারাগারে রয়েছেন ৩শ নেতাকর্মী। আর বাকি নেতাকর্মীরা জামিন না নিতে পেরে এখনো পলাতক ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এসব মামলায় সিলেট বিএনপির ও অঙ্গ-সংগঠনের শীর্ষ নেতাকর্মীরা সহ আন্দোলনে মাঠে সক্রিয়-নিষ্ক্রিয় অনেকেই আসামী হলেও এখন পর্যন্ত মামলার আসামী হননি সিলেট বিএনপির কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও এডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী। তারা মামলার আসামী থেকে রেহাই পেয়েছেন।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮শে অক্টোবর থেকে মাত্র দুই মাসে সিলেট নগরী ও নগরীর বাহিরে বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশের দায়ের করা ৬৮টি মামলায় নাশকতা, পুলিশ অ্যাসল্ট, গাড়ি ভাঙচুর, সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।

দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ণ করতে গিয়ে নেতাকর্মীদের উপর দায়ের করা এসব মামলা মোকাবেলা করতে আইন সহায়তা সেল নামে একটি সেল গঠন করেছে সিলেট জেলা বিএনপি। এই সেল থেকেই নেতাকর্মীদের আইনী সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আর ২৮শে অক্টোবর থেকে আইন সহায়তা সেলের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।

পুলিশের দায়ের করা এসব মামলায় দলের কোন কোন নেতাকর্মীবে ১৪/১৫টি পর্যন্ত মামলায় আসামী করা হয়েছে। এসব মামলায় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি, মহানগর বিএনপি সভাপতি নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল জেলার আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব আফসর খান সহ শীর্ষ নেতাদের আসামী করা হয়েছে।

এর মধ্যে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল জেলার আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব আফসর খান, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান সহ প্রায় তিনশত নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন।

কে কত মামলার আসামী?
এসব মামলার মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫টি মামলা হয়েছে এসএমপির কোতোয়ালি থানায়। এর মধ্যে ১৮টি মামলা নিয়ে শীর্ষ তালিকায় রয়েছেন মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান। জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার ১৪টি, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসার খান ১৩টি, আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী ৭টি, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী ৬টি, নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ৫টি, সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী কয়েস ৫টি, জেলা স্বেচ্ছাসেব দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ৪টি মামলার আসামি। এর বাইরে জেলা ও নগর বিএনপি’র প্রায় সব নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ২৮শে অক্টোবর সিলেটে প্রথম নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন নগর বিএনপি’র সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংকি।

এদিকে, ২৮শে অক্টোবর ঢাকার ঘটনায় সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীম, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু আসামি হয়েছেন।

সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, সিলেটে ২৮শে অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নগর ও জেলার বিভিন্ন থানায় ৬৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় অন্তত ৩০০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর নেতাকর্মীদের রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।

তারা জানিয়েছেন, সিলেটে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের জন্য ইতিমধ্যে বিএনপির তরফ থেকে একটি আইনি সহায়তা সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল থেকে তাদের আইনি সহায়তা করা হচ্ছে। অনেক মামলা প্রশাসন থেকে করা হয়েছে সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।

আজকের সিলেট/এসআরসি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর