সিলেটে হঠাৎ করে বেড়েছে লোডশেডিং পাশাপাশি চরম আকার ধারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। নগরীসহ জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামুলক কমলেও দফায় দফায় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতব্যক্তিরা পোহাচ্ছেন চরম ভোগান্তি। সিলেটে লোডশেডিং কমলেও ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট আরও কিছুদিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, দিনে অন্তত ৫ থেকে ৬ বার চলে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। কখনো ১০-১৫ মিনিট আবার কখনো ১ ঘন্টা পর দেয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ। তুলনামুলক গরম কমে যাওয়ায় সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও কমেছে বিদ্যুতের চাহিদা। ফলে সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক। এরপরও বার বার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে একদিকে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহক, অপরদিকে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার কারণে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি।
এদিকে, নগরীর বিভিন্ন এলাকার ফিডারগুলোতে মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সাময়িক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ৬ ঘন্টা পর্যন্ত। প্রায় প্রতি সপ্তাহে এক বা একাধিক দিন মেরামত কাজের জন্য কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে দৈনন্দিন কর্ম সম্পাদনসহ অফিস-আদালতের কার্যক্রমে ব্যাপক হারে বিঘœ ঘটে। এ বিষয়ে সিলেটের গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সিলেট মহানগরী ও জেলায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) ৫ লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছেন। এই গ্রাহকদের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ১৩৫-১৪০ মেগাওয়াট। বিপরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় ১০০-১২০ মেগাওয়াট। যদিও বুধবার সিলেট জেলায় সরবরাহ হয়েছে ৯৭ মেগাওয়াট। মঙ্গলবার সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় স্বাভাবিক ছিল। তারপরও এদিন নগরীতে ৫ থেকে ৬বার ঘটেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। তবে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বলছেন, অপরিহার্যতায় এমনটি করা হচ্ছে।
বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ কর্তৃপক্ষ জানান, সিলেটের বিদ্যুতের মূল সংযোগে ১৯৬৭ সালের তার এখনও রয়ে গেছে। সামান্য ঝড়বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এছাড়া অনেক সময় কোন কারণ ছাড়াই কারিগরি ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ক্ষেত্রে অনেক সময় ট্রান্সফরমারের ফিউজ পুড়ে যাওয়া কিংবা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে পাখি বসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে থাকে। সে সময় পুরো সঞ্চালন লাইন বন্ধ রেখে মেরামত কাজ করতে হয় বিধায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িক বন্ধ রাখতে হয়। না হয় সাধারণত ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রেখে সংযোগে নতুন তার লাগানো কিংবা সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেট বিভাগীয় অফিসের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, সিলেটে গত কয়েকদিন থেকে বিদ্যুতের চাহিদামতো সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বুধবার লোড কম পাওয়ায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোডশেডিং করতে হয়েছে। এছাড়া কারিগরি ত্রুটিজনিত কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট কোনভাবেই কাম্য নয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
তিনি বলেন, বুধবার সিলেট জেলায় ১৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৯৭ মেগাওয়াট। ৩৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় ২৯ শতাংশ লোডশেডিং হয়েছে। বিভাগে ১৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ১৩৩ মেগাওয়াট। ৫১ মেগাওয়াট ঘাটতির কারণে ২৮ শতাংশ লোডশেডিং হয়েছে।
আজকের সিলেট/ডি/এসটি