শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত গৃহিণীরা
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৮

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত গৃহিণীরা

সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা, গোয়াইনঘাট থেকে

প্রকাশিত: ২১/১১/২০২৪ ০৯:১৫:৪০

শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত গৃহিণীরা


গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ গৃহিণীরা পারিবারিক সবজির চাহিদা মেটাতে বছরের বারো মাস জুড়ে বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষ করে থাকেন। সবজি আবাদ করে তাদের পরিবারের স্বচ্ছলতায় বড় ধরনের ভূমিকা রাখেন ঘরের গৃহিণীরা। বাড়ীর নিজস্ব পতিত জমি, বাড়ির আঙ্গিনায় মৌসুম বেঁধে লালশাক, ডাটাশাক, পুইশাক, কলমিশাক, ঢেঁড়শ, বরবটি, টমেটো, লাউ ও লাউশাক, পাটশাক, শশা, কাঁচকলা, বেগুন, পেপে, করলা, কচুশাক, কচুর লতি, ধনে পাতাসহ নানা প্রকার সবজি চাষ করে থাকেন।

বিশেষ করে শীতকালীন সময় এলে উপজেলার প্রতিটা ঘরের গৃহিণীরা যার যার সাধ্যমত জায়গা বুঝে শীতকালীন শাকসবজি আবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।যেটাকে গ্রামের ভাষায় বিচরাখেত বলে থাকেন।এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়।

বর্তমানে উপজেলার সিংহভাগ গৃহিণীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শীতকালীন সবজি আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন।একসময় সবজি আবাদে শ্রেণীবিবেদ থাকলেও বর্তমান সময়ে ধনী গরিব সব ঘরের গৃহিণীরাই পারিবারিকভাবে সবজির চাহিদা মেটাতে মাঠে ও বাসা বাড়িতে সবজি চাষ করে থাকেন। রাসায়নিক ও কীটনাশক মুক্ত হওয়ায় খাবারের স্বাদ ও বাজারে চাহিদা অনেক বেশি।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়,বসতবাড়ির আঙ্গিনায়,বাড়ির পাশের মাঠে অনাবাদি জমিতে হরেক রকমের শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহিণীরা। অতীতে কোদাল ও গবাদিপশু দিয়ে চাষ করে জমি তৈরি করলেও বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে জমি তৈরি করেন।তাই অনেক অনাবাদি জায়গা এখন আবাদের আওতায় চলে আসছে।

জানা যায়, হেমন্তের শুরুতে কার্তিক মাসেই শুরু হয় গৃহিণীদের শীতকালীন সবজি চাষের কর্মযজ্ঞ।জমি তৈরি বন বাচাই বীজ বপন চারা রোপনসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় মেতে উঠেন গৃহিণীরা।ছোট ছোট করে বেড তৈরির মাধ্যমে বেডের চারিদিকে এক দেড় ফুটের মত জায়গা পানি নিষ্কাশন, চলাচল ও পরিচর্যার জন্য খাল রেখে বেড তৈরি করেন।বেডের চারিদিকে আবার কাদা মাটি দিয়ে সুন্দর করে লেপন করে থাকেন।যাতে করে পানি দেওয়ার পর বাহিরে যেতে না পারে।অল্প অল্প জায়গায় হরেক রকমের সবজি চাষ করেন।

গৃহিণীদের এই কারো কাজ দূর থেকে দেখলে ছবির মত সুন্দর দৃশ্য যে কারো মন কাড়ে। কীটনাশক মুক্ত ওইসব শাক সবজি উৎপাদন করে নিজ পারিবারের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে তারা বাড়তি আয়ও করেন। যারাই সবজি চাষ করছেন তারাই আবার পাড়া মহল্লায় ও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। কম শ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় এই চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরাও। ঘরের গৃহিণীদের পাশাপাশি পুরুষরা তাদের কাজে সহযোগিতা করেন। একটা সময় গৃহিণীরা সবজি আবাদ করে থাকলেও বর্তমান সময়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে শীতকালীন সবজি আবাদ করা হয়।উপজেলা কৃষি অফিস ও গৃহিনীদের এইসব সবজি চাষকে শীতকালীন সবজি আমাদের আওতায় নিয়ে এসেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়,এবছর উপজেলায় শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪০০০ হাজার হেক্টরের উপরে।কৃষককের মাঝে স্বল্প মেয়াদী শাক সবজি ও মধ্য মেয়াদী লতা জাতীয় শাক সবজির বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ।

আজকের সিলেট/প্রতিনিধি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর