জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মেনে সিলেট নগরের প্রধান প্রধান সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে দিয়েছেন হকাররা। ফলে এক অন্যরকম নগরের দেখা পাচ্ছেন নগরবাসী। দখলমুক্ত সড়ক ও ফুটপাত। কোথাও হকার নেই। ফলে যানজটও কমে গেছে অনেকটা। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এই অবস্থা অব্যাহত রাখার দাবি জানেয়েছেন তারা। আর নগরীর ফুটপাত দখলমুক্ত করতে নানা উদ্যোগের পর এবার এক সাধে কাজ করছেন সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও এসএমপি।
নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা জিন্দাবাজার, লামাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার ও তালতলা এলাকায় ফুটপাত ও সড়কে হকারদের দেখা মিলেনি। তবে এসব এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তারা হেঁটে হেঁটে এসব এলাকায় টহল দিয়েছেন। ফুটপাতে কোন হকার না থাকায় স্বাচ্ছন্দে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছেন শিক্ষার্থীসহ পথচারিরা।
এদিকে, সড়ক ও ফুটপাতে এখন আর নেই হকারদের দাপট না থাকলেও অনেকটা খালি সড়কে সিএনজি অটোরিকশার একাধিক সারি থাকায় রাস্তা কিছুটা সংকুচিত দেখা গেছে। ফুটপাত-সড়কে হকার না থাকায় বদলেছে নগরীর চিরচেনা চিত্র। কমেছে সড়কে যানজট। ফুটপাতে বেড়েছে স্বাচ্ছন্দে হাঁটার দৃশ্য। ফলে স্বস্তি ফিরেছে নগরজীবনে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, রোববার থেকে নগরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে একযোগে অভিযান চালানো হচ্ছে। এতে সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংশ নেন। তবে তার আগেই হকাররা সড়ক ও ফুটপাত ছেড়ে চলে যান।
এদিকে, হকারদের পুণবার্সনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে লালদিঘির পড়ের মাঠ। তবে সড়ক ছাড়লেও রোববার এই মাঠে সামান্য সংখ্যক হকারদের দেখা গেছে। মাঠের বেশিরভাগ জায়গাই ফাঁকা রয়েছে। কয়েকজন দোকান প্রস্তুত করতে দেখা গেছে।
তাদের একজন বলেন, আমরা এরআগেও দুবার এখানে এসেছি। এখানে ক্রেতারা আসেন না। ফলে ব্যবসাও হয় না। এই মাঠে প্রবেশের রাস্তাও খুব সরু। ব্যবসা না করতে পারলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি আমাদের যেনো স্থায়ী একটি ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, হকাররা ফুটপাত ছাড়ায় খুশি নগরবাসী। বন্দরবাজার হাসান মার্কেটের ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটের সামনের প্রায় পুরোটা সড়ক তো হকাররা দখল করে নিয়েছিলো। সব সময় এখানে যানজট লেগে থাকতো। ক্রেতারাও ফুকতে পারতো না। আজ দেখি ফুটপাত ফাঁকা, যানজট নেই। মনে হচ্ছে সত্যিই পরিবর্তন আসছে।
নগরবাসী প্রশাসনের এই কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানালেও তাদের আশঙ্কা—এই অবস্থা কতদিন থাকবে? আবারও কি পুরনো চিত্রে ফিরে যাবে শহর?
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযান একদিনের নয়, চলবে ধারাবাহিকভাবে—যতদিন না পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত ও সড়ক পুরোপুরি দখলমুক্ত রাখা যায়।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লালদিঘীরপারস্থ হকার মার্কেটের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। এখানে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার হকারের ব্যবসার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট পণ্যের জন্য আলাদা এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, লালদিঘির পাড় মাঠে হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবাইকে সেখানে চলে যেতে হবে। নগরের ব্যস্ততম এলাকার সড়কে হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। বসলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজকের সিলেট/ডি/এসটি
নিজস্ব প্রতিবেদক 












