
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেছেন, আজকের এই দিনটি শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের ৮০টি দেশে পালিত হচ্ছে। যে স্বপ্ন নিয়ে আমাদের শ্রমিকরা আত্মহুতি দিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন আজও বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের শ্রমিকরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না, নারী শ্রমিকরা মজুরী বৈষম্যের শিকার। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের কৃষক-শ্রমিকদের নিয়ে দেশকে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান ৩১ দফা কর্মসূচিতে শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে রেখেছেন। বিএনপি শ্রমিকদের দাবি আদায়ে বদ্ধ পরিকর।
বৃহষ্পতিবার মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে সিলেট জেলা শ্রমিক দল আয়োজিত র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে আওয়ামীলীগ শ্রমিকদের অধিকার হরণ করেছে। তারা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে মেনে নেয়নি এখনো স্বৈরাচারের দোষররা শ্রমিকদের ব্যাবহার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। তাই শ্রমজীবী ভাইদের তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি রাষ্ট্রপরিচালনার সুযোগ পেলে শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ করা হবে ইনশাআল্লাহ।
জেলা শ্রমিকদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল মুকিতের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় র্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রাধান বক্তব্যার বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সহ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি সাদিকুর রহমান, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীম আহমদ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকরা দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। সেই রক্তস্নাত ইতিহাস আজ আমাদের প্রেরণার উৎস। মে দিবস কেবল একটি তারিখ নয়- এটি হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা আজও ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অপেশাদার ব্যবস্থাপনার কারণে শ্রমজীবী মানুষ প্রতিনিয়ত বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। বিএনপি সবসময় শ্রমজীবী মানুষের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সহ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মে দিবস মানেই শ্রমজীবী মানুষের আত্মত্যাগ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার অনন্য ইতিহাস। ১৮৮৬ সালের এই দিনে শিকাগোর শ্রমিকরা তাদের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন-শ্রমিকের মর্যাদা অম্লান। সেই আন্দোলনের সূত্র ধরে আজকের আধুনিক শ্রমনীতি গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি সব সময় শ্রমিকবান্ধব নীতিতে বিশ্বাস করে। আমরা চাই এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে শ্রমিকরা হবে সম্মানিত, তাদের শ্রমের মূল্য পাওয়া যাবে, এবং তাদের ভবিষ্যৎ হবে নিরাপদ। শ্রমিকদের জন্য টেকসই ক্ষুদ্র ঋণ ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা এবং আবাসনের ব্যবস্থা আমাদের অগ্রাধিকার।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, মে দিবস আমাদের শিক্ষা দেয়-আন্দোলন আর ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসেই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার অর্জিত হয়। আজকের এই দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে-আমরা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাজপথে থাকব, তাদের পাশে থাকব, এবং দেশের প্রতিটি কল-কারখানায় শ্রমিকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করব।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শ্রমিকদের কণ্ঠরোধ করেছে, শ্রম আইনের নামে শোষণকে বৈধতা দিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে একটি কল্যাণমুখী শ্রমনীতি প্রণয়ন করে শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মে দিবস শুধু স্মরণ করার দিন নয়, এটি চেতনায় ধারণ করার দিন। আসুন, আমরা সবাই মিলে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হই এবং এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।
সমাবেশ শেষে নগরীর কুমারপাড়া থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশ ও র্যালিতে রং বেরংয়ের বিভিন্ন ব্যানার, ফ্যাস্টুন ও প্লেকার্ড নিয়ে সিলেট জেলা শ্রমিক দল এবং বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
শ্রমিকদল নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, লিটন আহমেদ চৌধুরী আব্দুল লতিফ খান নিজাম আহমদ। সোহেল আহমদ।মইনুল ইসলাম চৌধুরী অপু। জুমেল ইসলাম আরো বিভিন্ন উপজেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট জেলা শ্রমিক দলের আহবায়ক হাজী সুরমান আলী ভাইয়ের সুস্থতা কামনা করে দোয়ার মাধ্যমে শেষ হয়।
আজকে সিলেট/ডি/এপি
