সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী মালয়েশিয়া শ্রমবাজার
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১৯ AM

সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী মালয়েশিয়া শ্রমবাজার

প্রবাস জীবন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১/১১/২০২৫ ০৯:২৬:৩৯ AM

সিন্ডিকেটের হাতে বন্দী মালয়েশিয়া শ্রমবাজার


মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ওপর নতুন করে কঠোর শর্ত আরোপ করেছে দেশটির সরকার। অন্তত তিনটি দেশে কমপক্ষে তিন হাজার কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা এবং ন্যূনতম পাঁচ বছরের জনশক্তি রপ্তানির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে— এমন শর্ত দিয়েছে তারা। তবে এসব শর্তকে ‘অবাস্তব ও অযৌক্তিক’ বলে দাবি করছে বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকরা। তাদের অভিযোগ, পুরোনো সিন্ডিকেট চক্রকেই টিকিয়ে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই জনপ্রিয় গন্তব্য। ভালো বেতন কাঠামো, আরামদায়ক আবহাওয়া ও উন্নত জীবনমানের কারণে দেশটিতে কর্মসংস্থানের আগ্রহ সবসময়ই বেশি। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন খাতে কাজ করছেন।

সবশেষ বছরখানেক আগে কলিং ভিসায় প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তবে কর্মী পাঠানোর প্রতিটি ধাপেই অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে— বিশেষ করে সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, প্রতারণা ও কাজ না পেয়ে কর্মীদের মানবেতর জীবনযাপন।

২০২১ সালে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় চালু হলে ১০০টি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি পায়। অভিযোগ রয়েছে, এসব এজেন্সির অনেকেই ৫-৬ লাখ টাকা করে নিলেও অন্তত ১৮ হাজার প্রার্থী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি।

সর্বশেষ ঘোষণায় মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে, রিক্রুটিং এজেন্টদের নতুন শর্ত পূরণ করতে হবে- অন্তত তিনটি দেশে ন্যূনতম পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, মালয়েশিয়ায় কমপক্ষে তিন হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে, এবং কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস থাকতে হবে।

তবে এসব শর্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, “সিন্ডিকেটের যেসব সদস্য আছেন, তারাই কেবল তিন হাজারের বেশি কর্মী পাঠাতে পেরেছেন। অনেক অভিজ্ঞ এজেন্সি এই শর্ত পূরণ করতে পারবেন না। সরকারকে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা জরুরি।”

বায়রার সাবেক মহাসচিব এম. এ. এইচ. সেলিম বলেন, “রিক্রুটিং এজেন্সির অফিস কত স্কয়ারফুট হবে, সেটা মালয়েশিয়া নয়— বাংলাদেশ সরকার নির্ধারণ করবে। মালয়েশিয়ার এই শর্তগুলো মূলত পুরোনো সিন্ডিকেট চক্রের প্রভাবেই তৈরি করা হয়েছে।”

মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে, যেসব এজেন্সি এসব শর্ত পূরণে সক্ষম, তাদের আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

আজকের সিলেট/ডি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর