হাওরে অল্প দামে ধান কিনে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৬:৪২

হাওরে অল্প দামে ধান কিনে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৪/০৫/২০২৪ ০১:১২:০৪

হাওরে অল্প দামে ধান কিনে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা


হাওরে ধানকাটা প্রায় শেষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাটা ধানের চিটা ছাড়িয়ে রোদে শুকিয়ে সহজেই গোলাজাতও করেছেন কৃষক। বাম্পার ফলনে সবার মুখে হাসি। সরকার কৃষক পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহের মূল্য নির্ধারণ করলেও এখনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেনি। তাছাড়া সরকারিভাবে এখনো ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় মাঠ থেকে অল্প দামে ধান কিনে নিচ্ছেন ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগীরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার দুই লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছিল। এ পর্যন্ত হাওরের প্রায় ৯৮ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। রোদের কারণে সহজেই কাটা ধান শুকিয়ে গোলাজাত করেছেন কৃষক। অনুকূল আবহাওয়ায় সঠিক তাপমাত্রায় ধানও শুকিয়ে গোলাজাত করায় গুণাগুণও সুরক্ষিত হয়েছে।

কৃষকরা জানান, ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের হাত খালি থাকায় ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এই সুযোগে দালাল, ফড়িয়া ও মধ্যস্বত্বভোগীরা ভেজা ও শুকনা ধান ৮০০-৯০০ টাকা মণ দরে কিনে নিচ্ছেন। গুদামে ধান দিতে গিয়ে হয়রানি, লটারির নামে সংশ্লিষ্টদের পক্ষপাতিত্বসহ নানা কারণে গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন কৃষকরা। একদল মধ্যস্বত্বভোগী কৃষকদের কার্ড নিয়ে তাঁদের নামে ধান দিতে তৎপরতা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার গত সপ্তাহে বোরো ধান-চাল সংগ্রহের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে। এবার বোরো ধান এক হাজার ২৮০ টাকা মণ দর নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু হাওর থেকে কী পরিমাণ ধান সরকার নেবে, তার লক্ষ্যমাত্রা এখনো দেয়নি।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী গ্রামের কৃষক সাদির মিয়া বলেন, আমি এ বছর প্রায় ৭০ কেয়ার (প্রতি কেয়ার ৩০ শতাংশ) জমিতে ধান করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। দুই কেয়ার জমি কাটার বাকি আছে। কাটা ধান শুকিয়ে বাড়িতেও নিয়েছি। আমার টানাপড়েন না থাকায় ধান বিক্রি করছি না। তবে যেসব কৃষক টানাপড়েনে আছেন, তাঁরা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন।

দেখার হাওরের ইসলামপুর গ্রামের কিষাণি আলমচাঁন বিবি বলেন, আমি ৯ কেয়ার জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলাম। সব ধান কাটা শেষ। কৃষিকাজ করে হাত খালি। তাই ধান কাটার পরই ধান বিক্রি করতে হয়েছে। আমার মতো অন্য গরিব কৃষকরাও কম দামে ধান বিক্রি করে দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মঈনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, এখনো আমরা লক্ষ্যমাত্রা পাইনি। তবে সরকার ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে। অনলাইনে আবেদনের পর লটারিতে সাতটি উপজেলা থেকে কৃষক বাছাই করে গুদামে ধান নেওয়া হবে। এখানে অনিয়মের সুযোগ নেই।

আজকের সিলেট/ডি/এসটি

সিলেটজুড়ে


মহানগর